ইরাকের দজলা তীরে মিললো প্রাচীন প্রাসাদ

প্রাচীন ঐতিহ্যের দেশ ইরাক এবার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বছরের একটি প্রাচীন প্রাসাদের সন্ধান দিল। পানি সঙ্কটের কারণে দেশটির কুর্দিস্তান অঞ্চলের মসুল বাঁধ এলাকার একটি জলাধার খুড়তে গিয়ে পাওয়া ওই প্রাসাদের আনুমানিক বয়স ৩ হাজার ৪’শ বছর। যৌথভাবে ওই খননকাজে অংশ নেওয়া কুর্দি-জার্মান দলটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

টাইগ্রিস(দজলা)নদীর অববাহিকায় প্রত্নতত্ত্বের এই আবিষ্কার দেশটির মিত্তানি শাসকদের সম্পর্কে তথ্য যোগাবে বলে মনে করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন মিত্তানি শাসকদের সম্পর্কে খুব কমই ধারণা পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি আরো খনন করা হলে মিত্তানিদের সম্পর্কে বিস্তর তথ্য পাওয়া যাবে।

কুর্দিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাসান আহমেদ কাসিম বলেছেন, প্রাচীন এই প্রাসাদটি সাম্প্রতিক কালের মধ্যে ইরাকের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার।

জানা গেছে, প্রাসাদটি নদী থেকে মাত্র ৬৫ ফুট দূরে একটি উচু যায়গায় অবস্থিত। ভবনটিকে সুরক্ষিত করতে কাদা ইটের একটি প্রাচীর দ্বারা বেস্টনি দেওয়া রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে নদীর তীরে হওয়ায় যে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে প্রাসাদটিকে রক্ষা করতে এমন পুরু প্রাচীর নির্মাণ করা হয়।

ইউনিভার্সিটি অব তুবিনজেনস এর ইনস্টিটিউট ফর অ্যানসিয়েন্ট নিয়ার ইস্টার্ণ স্ট্যাডিজ বিভাগের প্রফেসর আইভ্যান পুলিজ প্রাসাদটিকে বর্ণনা করেছেন কেমুনি হিসেবে। যা মাটি ও ইটের সমন্বয়ে তৈরি। নির্মাণে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। যার নিরাপত্তা দেয়ালটি গড়ে প্রায় ২ ফুট পুরু। উঁচু অন্তত ২ মিটার। প্রাসাদের ভেতরে অনেক কক্ষ রয়েছে যেগুলোর দেয়াল প্লাস্টার করা।

প্রত্নতাত্ত্বিক ওই দলটির বর্ণনা মতে, প্রাসাদটির মূল রঙ লাল এবং নীল। যা তার দেয়ালের বিভিন্ন স্থানের রঙ দেখে আন্দাজ করা যায়। আইভ্যান পুলিজের ভাষায়, পুরো প্রাসাদটিতে রঙ ও নির্মাণের যে মিশ্রণ তাতে সেটি উন্নত প্রত্নতত্ত্ব ও নকশার পরিচায়ক। খননকাজ শেষে খুব শিগগিরই সেটি দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করার কথাও জানান তিনি।  

২০১৬ সালে কুর্দিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাসান আহমেদ কাশিম তুবিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একটি প্রকল্পেও কাজ করেন। সে সময় তিনি উত্তর ইরাকে ব্রোঞ্জ যুগের শহর উন্মোচন করেন। বর্তমানে যেটি ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের ছেড়ে যাওয়া কুর্দিস্তানের কাছাকাছি বাসেতকি গ্রামের নীচে অবস্থিত।

 

টাইমস/এমএস

Share this news on: