সাবেক স্বামীকে এসিড নিক্ষেপ: খল নায়িকা মিলা!

জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী মিলা। বহুদিন ধরে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছিলেন তিনি। তাদের নির্যাতনে অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন এই শিল্পী। এমনকি স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় অনেকটা ছিটকে পড়েছেন মিডিয়া থেকে।

এদিকে, কিছুদিন আগে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে, সাবেক স্বামী পারভেজ সানজারীর শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছিলেন মিলা। সেই ঘটনায় তার নামে মামলাও করা হয়। এই ঘটনায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন মিলা। তবে এবার হয়ত আটকে যেতে পারেন মিলা! কারণ, তার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী কিম জন পিটার হালদার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে সবকিছু ফাঁস করে দিয়েছেন।

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মিলার দেহরক্ষীকে আটক করেন।

মিলা ও মিলার সাবেক স্বামী সানজারী

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডিবিকে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে মিলার দেহরক্ষী কিম বলেছেন, মিলা আপুর মিউজিক রোবোট ব্যান্ডের দলে দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ মালামাল বহন করতাম। এরপর ৩ বছর ধরে তার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী হিসেবে সঙ্গে আছি। গত ২৫ মে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মিলা আপু কান্না করে বলে, সানজারী আমার জীবনটা নষ্ট করেছে। সানজারীকে তুইতো কিছু করতে পারবি না। যা করার আমি নিজেই করব।

তখন আমি মিলা আপুকে বলি আপনাকে কিছুই করতে হবে না, যা করার আমিই করবো। এ সময় মিলা আপুর সঙ্গে পরামর্শ করে সানজারীর গোপনাঙ্গে অ্যাসিড দেয়ার পরিকল্পনা করি। আপু বলে পারলে কিছু করে দেখা তারপর আমার কাছে আসিস। তখন আমি চিন্তা করি, মিলা আপুর জীবন যে নষ্ট করেছে, তার জীবনও আমি নষ্ট করবো। পরে ওই দিনই (২৫ মে) সন্ধ্যাবেলায় মিরপুর ডিওএইচএস সরকার মার্কেটে হার্ডওয়্যারের দোকান থেকে অ্যাসিড কিনে এনে একটি কাচের কৌটাতে ঢেলে ব্যাগের মধ্যে রাখি।

মিলা ও মিলার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী কিম জন পিটার

২৬ ও ২৭ মে দুই দিন উত্তরায় সানজারীর বাড়ির সামনে ইফতারের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অবস্থান করি। কিন্তু সানজারীর দেখা পাইনি। পরে ২ জুন বিকেলে সানজারীর বাসার সামনে যাই। আড়াল থেকে দেখতে থাকি ইফতারের পর আনুমানিক সাড়ে ৭টা থেকে ৭টা ৪৫মিনিটের দিকে সে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে ৫০ গজ সামনের দিকে যাওয়ার পরক্ষণে আমি ডাক দেই, ভাইয়া দাঁড়ান। এরপর মোটরসাইকেলের সামনে দুই হাত লম্বা করে দাঁড়িয়ে গতি রোধ করি।

সানজারীকে বলি ভাইয়া আমি বিপদে আছি, আমার দুইটা কথা শোনেন। সানজারী বলে ‘তোর সঙ্গে আমার কোন কথা নাই, তুই আমার সামনে থেকে চলে যা। তুই মিলার কাছের মানুষ’ এ সময় সানজারী মোটরসাইকেল ঘুড়িয়ে বাসার দিকে যেতে থাকলে আমি পুনরায় মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়িয়ে দ্রুত অ্যাসিডের কৌটা বের করে তার গায়ে ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যাই।

এ ঘটনার পর বিমানবন্দর স্টেশনে গিয়ে মিলা আপুকে ফোন করে বলি, আপু সানজারীর গায়ে অ্যাসিড দিয়েছি। আপু বলে ‘ঠিক আছে, ভালো কাজ করেছিস, এখন পালাই যা। পরে আপু আমাকে পূর্ব পরিচিত ব্যান্ডের রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। তিনি আমাকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতর আপুর বন্ধু টুকুন খানের বাসায় রেখে দেয়। পরে মিলা আপু আমার কাছে এসে দেখা করে সান্ত্বনা দেয় এবং বলে তোর জামিনের ব্যবস্থা আমি নিজেই করতেছি। এই সময় মিলা আপু আমাকে শিখিয়ে দিয়ে বলে, ‘তোর সঙ্গে আমি মোবাইল এ কথা বলি, এই অ্যাসিড মারার কথায় আমার নাম বলবি না। তুই বলবি আমি নিজের ইচ্ছাতেই এই কাজ করেছি। আমাকে বাঁচান’। মূলত পরিকল্পনা করেই এই ফোন কলটি আমরা করেছিলাম।

এবার শিল্পী মিলার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন সাবেক স্বামী

কণ্ঠশিল্পী মিলাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা

মিলার বিরুদ্ধে এসিড হামলার অভিযোগে মামলা

প্রসঙ্গত, ২ জুন সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলযোগে যাওয়ার সময় বাসার সামনের সড়কে অ্যাসিড হামলার শিকার হন মিলার সাবেক স্বামী সানজারী। এরপরেই গায়িকা মিলা ও তার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন পারভেজ সানজারীর বাবা এস এম নাসির উদ্দিন।

 

টাইমস/জেকে/টিএইচ

Share this news on: