কড়া পাহারায় রাজশাহীর আদালতে সাঈদীর হাজিরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলায় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ১০৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার রাজশাহী অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবির সরকারের আদালত ১০৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন। এর মধ্য দিয়ে ফারুক হত্যায় মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত সাঈদীর বিচার শুরু হলো।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় হুইল চেয়ার করে সাঈদীকে রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর ও দায়রা জজ আদালতে আনা হয়। শুনানি শেষে ১২টার দিকে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়।

এসময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ৬০ আসামি। অনুপস্থিত ছিলেন ৪৭ জন। এ মামলায় আসামি করা হয়েছিল ১১০ জনকে। এদের মধ্যে তিন জন আগেই মারা গেছে। বাকী ১০৭ জনের বিচার শুরু হল।

রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা ও জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শিরাজি শওকত সালেহীন জানান, মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১০৭ জন। ২০১২ সালের জুলাই মাসে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, মামলার ৬০ জন আসামি জামিনে আছেন। বাকিরা পলাতক। এ মামলায় সাঈদীরও জামিন রয়েছেন। তবে অভিযোগ গঠনের সময় আসামিদের হাজির থাকতে হয়। তাই সাঈদীকে রাজশাহী আনা হয়।

দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে নেয়া হচ্ছে। ছবি সংগৃহীত

এদিকে রাজশাহী আদালতে সাঈদীকে একনজর দেখতে আদালত প্রাঙ্গন ও এর আশপাশে ভিড় করেছেন স্থানীয়রা। উৎসুক জনতা তাকে একবার দেখতে ছুটে গেছেন সেখানে। রাজশাহী জামায়াত নেতারা ছাড়াও সাধারণ মানুষও ভিড় করেছেন আদালতের আশপাশে।

এদিকে সাঈদীকে আদালতে তোলা নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপক জোরদার করা হয়। আদালত চত্বরের কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চালায় পুলিশ ও ডিবি পুলিশ। তল্লাশি ছাড়া কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দখল নিয়ে ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা। ওই সংঘর্ষে শিবিরের ক্যাডাররা ছাত্রলীগ কর্মী ফারুককে হত্যা করে লাশ শাহ মখদুম হলের পেছনের ম্যানহলে ফেলে দেয়। ওই রাতে ছাত্রলীগের আরও তিন কর্মীর হাত-পায়ের রগও কেটে দেয় হামলাকারীরা।

পরদিন এ নিয়ে নগরীর মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৩৫ শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেক শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

পরে ওই মামলার হুকুমের আসামি করা হয় জামায়াতের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ বেশ কয়েকজনকে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজামী ও মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে গত সপ্তাহেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।এরপর বিষয়টি গোপন রাখা হয়। তবে বৃহস্পতিবারের হাজিরা উপলক্ষে আগের দিন বুধবার থেকেই আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করা হলে বিষয়টি প্রকাশ পায়।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ