গুম নিয়ে অবলীলায় মিথ্যা বলছেন আইনমন্ত্রী: মির্জা ফখরুল

জাতিসংঘের তলবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অবলীলায় মিথ্যা বলেছেন এমন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে একের পর এক গুমের ঘটনা ঘটলেও রাষ্ট্র সেটিকে এড়িয়ে যেতে চাইছে।

সোমবার  রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের সাহায্যে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে জেনেভায় মানবাধিকারের ওপরে নির্যাতনবিরোধী গুরুত্বপূর্ণ একটি কনভেনশন হয়।কনভেনশনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটি বাংলাদেশকে ডেকে এ দেশে যে নির্যাতন হয়, সে সম্পর্কে সরকারের বক্তব্য কী জানতে চেয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমাদের আইনমন্ত্রী অবলীলায় মিথ্যা কথা বলেছেন। আইনমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে কোনো গুম-খুনের ঘটনা তার জানা নেই।

সম্প্রতি নিখোঁজ হওয়া মোহনা টেলিভিশনের সাংবাদিক মুশফিকুর রহমান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখছি একজন সিনিয়র সাংবাদিক মুশফিকুর রহমান গুম হয়ে গেছেন। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের এমপি ছিলেন ইলিয়াস আলী। চৌধুরী আলম কমিশনার ছিলেন। তাদের এখন পর্যন্ত খুঁজে পাইনি। আমাদের ছাত্রদল, ‍যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, বিএনপির প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছেন। তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা এমন দেশে বাস করছি, যেখানে আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। সরকার নিজেদের সুরক্ষার জন্য দুর্নীতি করছে এবং দুর্নীতির টাকা দিয়ে বিদেশে বাড়ি বানাচ্ছে। যেখানে তারা বসবাসের জন্য ব্যবস্থা করছে।

মিডিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, মিডিয়া অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ডেঙ্গু সমস্যাকে সারা জাতিসহ বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে। না হলে সরকার যা শুরু করেছিল, তারাতো গুজব বলেই উড়িয়ে দিত। মিডিয়া এটাকে সামনে নিয়ে এসে এখন পর্যন্ত যে ভূমিকা পালন করছে, সেটা দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য প্রসংশিত।

তিনি বলেন, আজকের পত্রিকায়ও আছে, শুধু ঢাকায় গতকাল রোববার ১৭৬০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজারের ওপরে। অথচ মন্ত্রী যিনি দায়িত্বে আছেন, এমনকি মেয়র সাহেবরা কী বলেছেন, সেটা রিপিট করতে চাই না। আসলে এদের কোনো লজ্জা নেই। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই তাদের জবাবদিহিতা নেই। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে যেকোনো প্রকারে ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং জনগণের অর্থকে লুণ্ঠন করা। সংসদ তো এখন কিছুই নেই। ওখানে তথাকথিত তাদের পছন্দমতো একটা বিরোধী দল দাঁড় করিয়ে রেখেছে। এই সরকার একেবারেই গণবিরোধী। জনগণের স্বার্থবিরোধী সরকার। মানুষের নূন্যতম অধিকার লুণ্ঠনকারী সরকার।

এসময় সময় উপযোগী কর্মসূচি নেওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে দেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপিসহ সব অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের আহবান জানান তিনি।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী।

 

টাইমস/এমএস

 

Share this news on: