পুষ্টিগুণে ভরপুর টমেটো

সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি টমেটো। এটি শীতকালীন সবজি হলেও এখন সারা বছর পাওয়া যায়। সারা বিশ্বে আলুর পরই টমেটো উৎপন্ন হয়। অধিকাংশ দেশে টমেটোই অন্যতম প্রধান সবজি।

টমেটো কাঁচা, পাকা, এমনকি রান্না করে খাওয়া হয়। প্রতি মৌসুমে বিপুল পরিমাণ টমেটো সস, কেচাপ, চাটনি, জুস, পেস্ট, পাউডার ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, টমেটোর কদর মূলত ভিটামিন-সি এর জন্য। তবে এর রঙ, রূপ ও স্বাদও অনেককে আকৃষ্ট করে। সালাদ হিসেবেও অনেক টমেটো খাওয়া হয়। এটি শুধু খাবারে স্বাদই বাড়ায় না, এতে পুষ্টিতে ভরপুর।

পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম আহার উপযোগী টমেটোতে রয়েছে- পানি ৯৩.১ গ্রাম, প্রোটিন ১.৯ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, খনিজ ০.৬ গ্রাম, আঁশ ০.৭ গ্রাম, শর্করা ৩.৬ গ্রাম, সোডিয়াম ৪৫.৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১১৪ মিলিগ্রাম, কপার ০.১৯ মিলিগ্রাম, সালফার ২৪ মিলিগ্রাম, ক্লোরিন ৩৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-এ ৩২০ অন-র্জাতিক একক, থায়ামিন ০.০৭ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাবিন ০.০১ মিলিগ্রাম, নিকোটিনিক এসিড ০.৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ৩১ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম, অক্সালিক এসিড ২ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩৬ মিলিগ্রাম এবং লৌহ আছে ১.৮ মিলিগ্রাম।

টমেটোর পুষ্টির পাশাপাশি ভেষজ মূল্যও আছে। এর শাঁস ও জুস হজমকারক এবং ক্ষুধাবর্ধক। টমেটো রক্ত শোধক হিসেবেও কাজ করে।

এ তো গেল তাত্ত্বিক কথা; আসুন জেনে নেই নিয়মিত টমেটো খাওয়ার উপকারিতা এবং এর মাধ্যমে যেসব রোগ এড়ানো যায়-

ক্যান্সার প্রতিরোধে উপকারি
গবেষণায় দেখা যায়, টমেটোতে লাইকোপিন নামক এমন পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে, যাতে করে প্রোস্টেট ক্যান্সারের কোষগুলির বৃদ্ধি পায় না বরং তাদেরও শেষ করে দেয়। এছাড়াও টমেটোয় পর্যাপ্ত পরিমাণে উপস্থিত লাইকোপিন অনেক ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধে উপকারী।

স্বাস্থ্যকর চামড়া
নিয়মিত কাঁচা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা মধ্যে একটি হল স্বাস্থ্যকর চামড়া। টমেটোর উপস্থিত লাইকোপিন চামড়া থেকে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি রক্ষা করে। যা ত্বকের দাগছোপ এবং বলিরেখার একটি প্রধান কারণ হয়।

সৌন্দর্য ধরে রাখে
মুখের সৌন্দর্য ধরে রাখতে এবং বয়সের ছাপ দূর করতে টমেটো বেশ কার্যকর। এর রস মুখের ত্বক মসৃণ ও কোমল করে। বয়স বাড়তে থাকলে মানুষের মুখে যে বয়সের ছাপ পড়ে, তা টমেটো দেওয়ার ফলে সেই ছাপ লুকাতে সাহায্য করে।

ক্ষুধা বৃদ্ধি
রোজ টমেটো খেলে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা শক্তিশালী হয়, ঘাম পরিষ্কার থাকে এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়।

পেটের কৃমি দূর করা
যদি আপনার পেটের মধ্যে কৃমি থাকে, তবে প্রতিদিন রোজ খালি পেটে টমেটোর খাবার বা টমেটোর জুস পান করলে পেট থেকে সমস্ত কৃমি বের হয়ে যায়। টমেটোর উপর কালো মরিচ লাগিয়ে খাওয়া খুব লাভজনক।

বাতের ব্যথা উপশম
টমেটোয় উচ্চ বায়ফ্লেভোনাইড এবং বিটা ক্যারোটিন রয়েছে, যা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি এজেন্ট হিসাবে পরিচিত। যদি আপনার বাতের ব্যথা থাকে, তাহলে নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যা টমেটোর জুস খান। বাতের ব্যথা উপশম হবে।

ডায়াবেটিস উপকারী
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য টমেটোযুক্ত খাবার খুব লাভজনক হয়। টমেটো, ক্রোমিয়াম এর একটি খুব ভালো উৎস, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি শসা এবং টমেটো খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের উপকার হয়।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ