দিল্লি কলকাতাসহ সারা ভারতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
এই তালিকায় নাম রয়েছে মোট ২৩ টি প্রতিষ্ঠানের। ইউজিসির দাবি, চিহ্নিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বীকৃত নয় এবং তারা ইউজিসির শর্তাবলীও মানে না। খবর আনন্দবাজার।
ছাত্রছাত্রীরা যাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘দাবি’র ফাঁদে পা না দেন, তার জন্য সতর্ক করেছে ইউজিসি।
দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজর রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউজিসি।
অ্যান্টি ম্যালপ্র্যাকটিস সেল বা এএমপিসির পক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মোট ২৩ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪ টির নাম আগেও, ২০০৫-০৬ সালে ইউজিসি প্রকাশিত ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ছিল।
কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেই তালিকায়? রয়েছে দিল্লির বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
‘কমার্শিয়াল ইউনিভার্সিটি’, ‘ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটি’, ‘ভোকেশনাল ইউনিভার্সিটি’ এবং ‘এডিআর সেন্ট্রিক জুরিডিক্যাল ইউনিভার্সিটি’।
দিল্লির আরও একটি নতুন প্রতিষ্ঠানকে রাখা হয়েছে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের তালিকায়। সেটি হল ‘বিশ্বকর্মা ওপেন ইউনিভার্সিটি ফর সেল্ফ এমপ্লয়মেন্ট’।
এদের ওয়েবসাইটে জ্বলজ্বল করছে, ‘এই প্রতিষ্ঠান ইউজিসি-স্বীকৃত’। দিল্লির আরও একটি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেটি হল ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউশন অব সায়েন্স অ্যান্ড এঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়’।
কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অল্টারনেটিভ মেডিসিন’, ‘ইনস্টিটিউট অব অল্টারনেটিভ মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ’, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানদুটিও ভুয়া বলে চিহ্নিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের।
উত্তরপ্রদেশের সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ভুয়া বা স্বীকৃতিহীন বিশ্ববিদ্যালয় বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০০৫ সাল থেকেই তারা তালিকায় রয়েছে।
সেগুলো হল ‘বারাণসেয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘মহিলা গ্রাম বিদ্যাপীঠ/ বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘গাঁধী হিন্দি বিদ্যাপীঠ’, ‘ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ইলেক্ট্রো কমপ্লেক্স হোমিওপ্যাথি’, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ওপেন ইউনিভার্সিটি’, ‘উত্তরপ্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং ‘মহারানা প্রতাপ শিক্ষা নিকেতন বিশ্ববিদ্যালয়’।
এ ছাড়াও ইউজিসির নজরদারির তালিকায় থাকা সত্ত্বেও গত ১৪ বছর ধরে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান বহাল তবিয়তে চলে আসছে।
কর্নাটকের ‘বড়াগান্বী সরকার ওয়ার্ল্ড ওপেন ইউনিভার্সিটি এডুকেশন সোসাইটি’, কেরলের ‘সেন্ট জনস ইউনিভার্সিটি’ এবং মহারাষ্ট্রের ‘রাজা অ্যারাবিক ইউনিভার্সিটি’।
ওড়িশার ‘নবভারত শিক্ষা পরিষদ’ এবং ‘নর্থ ওড়িশা ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি’-কে অস্বীকৃত ও নকল বলে চিহ্নিত করেছে ইউজিসি।
পুদুচেরির ‘শ্রী বোধি অ্যাকাডেমি অব হায়ার এডুকেশন’-কেও ভুয়া প্রতিষ্ঠান বলেছে ইউজিসি।
উত্তরপ্রদেশের ‘ভারতীয় শিক্ষা পরিষদকে’ এখনও সম্পূর্ণ ভুয়া বা নকল বলেনি ইউজিসি। তাদের বিষয়টি এখনও বিচারাধীন বলে জানানো হয়েছে।
ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠানগুলির মোকাবিলায় ১৯৯৫ সালেই তৈরি হয়েছিল ইউজিসির অ্যান্টি ম্যাল প্র্যাকটিস সেল।
সেলের তরফে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। জারি হয়েছে শোকজ নোটিস। পদক্ষেপের জেরে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ঝাঁপ ফেলে ব্যবসা গুটিয়েছে বলে দাবি ইউজিসির। কিন্তু ভুয়া প্রতিষ্ঠান নির্মূল করা যায়নি।
টাইমস/জেডটি