মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। প্রতিদিনই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন হাজারো মানুষ। বাংলাদেশেও ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ইতোমধ্যেই সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন। সারাদেশেই চলছে অঘোষিত লকডাউন। বন্ধ রয়েছে সড়ক, রেল ও নৌ পথে যান চলাচল। সাধারণ মানুষকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কাজ না থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। পরিবার নিয়ে অনাহারে কাটছে অনেকের জীবন।
এমন পরিস্থিতিতে সরকার এবং অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন কর্মহীন ও অসহায়দের ঘরে ঘরে। এই কাজে এগিয়ে আসছেন সমাজের সব শ্রেণির মানুষজন। সাধ্য অনুযায়ী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশের এক প্রিয় মুখ মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক। করোনার এই পরিস্থিতিতে বসে নেই তিনিও। মোটরসাইকেলে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ছুটে চলছেন তিনি। করোনা পরিস্থিতিতে নিচ্ছেন মানুষের খোঁজখবর। হাতে হাতে তুলে দিচ্ছেন ব্যক্তিগত ত্রাণসামগ্রী।
সম্প্রতি মোটরসাইকেলে ছুটে চলেছেন নড়াইলের কোনো এক গ্রামে। শহর থেকে বেরিয়ে মুলিয়া এলাকায় গিয়ে হঠাৎ মোটরসাইকেল থামালেন। একজন কৃষক জমিতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। তার সামনে মোটরসাইকেল থামিয়ে বললেন, ‘চাচা আসসালামু আলাইকুম, আমি মাশরাফি। কেমন আছেন আপনি? আপনার বাসার সবাই ভালো? ঘরে খাবারদাবার আছে চাচা? এই নেন (এক প্যাকেট খাবার আর কিছু টাকা)। আসি চাচা, আমার জন্য দোয়া করবেন। করোনা সংক্রমণ থেকে সাবধানে থাকবেন।’
কৃষকের হাতে এক প্যাকেট খাবার দিয়ে আবার মোটরসাইকেলে চলতে শুরু করলেন। নিম্নআয়ের এমন অসংখ্য মানুষের বাড়ির সামনে মোটরসাইকেল থামিয়ে কাউকে খাবার, কাউকে টাকা দিয়ে গেছেন তিনি। এসব পরিবারের আত্মসম্মানের কথা ভেবে ত্রাণ কিংবা সহযোগিতা দেয়ার ছবি তুলতে নিষেধ করেছেন এমপি। এসব মানুষ কখনও মাশরাফির এসব সহযোগিতার কথা ভুলবে না। মন ভরে মাশরাফির জন্য দোয়া করবে, যুগ যুগ বেঁচে থাকার।
সংসদ সদস্য হলেও আশপাশে নেই পুলিশ। নেই কোনো গাড়িবহর কিংবা হুইসেল। অন্য এমপিদের মতো কোটি কোটি টাকার দামি গাড়িতে চড়েন না এই এমপি। গাড়ির গ্লাস খুলে জনতাকে ডাকেন না। পুলিশ কিংবা নিরাপত্তারক্ষী নেই তার। সত্যি এমন এমপি পাওয়া যেকোনো এলাকার মানুষের জন্য সুভাগ্যের বিষয়।
টাইমস/এইচইউ