হেডলাইন পড়ে অবাক হলেন তো! অবাক হবারই কথা। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামে।
ওই গ্রামের বাবুল রায়ের ১২ বছরের মেয়ে বিথিকা রায়। সে স্থানীয় মলানপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
দশদিন আগে হঠাৎ করেই বিথিকার শারীরিক গঠন পরিবর্তন হতে শুরু করে। পেট ফুলতে থাকে। এতে ঘাবড়ে যায় তার পরিবারের লোকজন। তাদের সন্দেহ হয়, শিশুটি হয়তো কারও দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
এমন সন্দেহ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে নিয়ে রংপুরের এক ডাক্তারের কাছে যান। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান- বিথিকার পেটে বড় আকারের টিউমার রয়েছে। যা জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা প্রয়োজন।
পেশায় দিনমজুর শিশুটির বাবা বাবুল রায় রংপুরে অপারেশন করার সামর্থ্য না থাকায় মেয়েকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও হাসান এক্স-রে ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে তিনি ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েলের শরণাপন্ন হন।
ডা. জুয়েল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রথমে অপারেশন করতে রাজী হননি। পরে বাবুলের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন।
শুক্রবার বিকেলে সফলভাবে অপারেশন করা হয়। অপারেশনে দেখা যায়, শিশুটির পেটে প্রায় চার কেজি ওজনের টিউমার রয়েছে। যে টিউমারটি কেটে ডাক্তারের চোখ ছানাবড়া। কেননা, টিউমারের ভেতরে আরেক শিশুর বসবাস। সেখানে মানবদেহের হাত, কলিজাসহ নানা অংশ বিদ্যমান।
এ ব্যাপারে ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েল বলেন, মেডিকেল সাইন্সে এটাকে বলে “Fetus in feto” অর্থাৎ বাচ্চার পেটের ভেতরে বাচ্চা। জন্মগতভাবে বিথিকা যমজ। কিন্তু কোনো কারণবশত আরেক শিশু পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়নি। এটা বিথিকার জন্মের সময় থেকে তার পেটে থেকে যায়।
তবে ডাক্তার জানিয়েছেন, অপারেশনের পর শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো। আশা করা যায় আর কোনো ঝুঁকি নেই।
টাইমস/জিএস