ট্রাম্পের জন্য আধা ঘণ্টা পিছিয়ে যায় খেলা, গ্যালারিজুড়ে ক্ষোভ-দুয়োধ্বনি

আবারও শিরোনামে উঠে এলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউএস ওপেনের পুরুষ এককের ফাইনাল দেখতে গিয়ে ভক্তদের বিরক্তের কারণ হলেন। দুয়োধ্বনি শুনতে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।

২০০০ সালের ইউএস ওপেন ফাইনাল দেখতে গিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন। ২৫ বছর পর আবার কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের পায়ের ধুলো পড়ল আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে। কিন্তু কার্লোস আলকারাজ বনাম ইয়ানিক সিনার ফাইনাল শুরু হওয়ার আগেই ট্রাম্পকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। অভিযোগ, তার জন্যই ফাইনাল ম্যাচ আধা ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়। ট্রাম্পকে নিয়ে দর্শকদের ক্ষোভ ছিল শুরু থেকেই।

ট্রাম্প ইউএস ওপেনের ফাইনাল দেখতে আসবেন, এই খবর চূড়ান্ত হতেই ইউএস সিক্রেট সার্ভিস এবং অন্য নিরাপত্তা এজেন্সিগুলো তৎপর হয়ে ওঠে। ২৪ হাজার আসনের স্টেডিয়ামে ঢোকার আগে প্রত্যেক দর্শকের কড়া তল্লাশি চালানো হয়। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুর দুটায় যে ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল, এ কারণেই তা আড়াইটার আগে শুরু করা যায়নি।

ব্রুকলিনের বাসিন্দা কেভিন রয়টার্সকে বলেছেন, তাকে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফাইনাল ম্যাচ দেখতে হয়েছে। পুরো দোষ তিনি ট্রাম্পের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। বলেছেন, ‘একশো শতাংশ উনিই দায়ী। অত্যন্ত স্বার্থপর। ওর জানা উচিত, যে শহরে তাকে ঘৃণা করা হয়, সেখানে এমন একটা ম্যাচ ওর জন্য দেরিতে শুরু হওয়া ঠিক নয়।’

আরেক দর্শক ‘পেজ সিক্স’-কে তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তার বক্তব্য, ট্রাম্পের ফাইনাল দেখতে আসার কারণেই যাবতীয় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। তিনি বলেছেন, ‘অনেক দর্শক গাড়ি পার্কিং করতে পারেননি। মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয়েছে। সেলিব্রিটিদেরও ঠায় অপেক্ষা করতে হয়েছে।’ মিশিগান থেকে ফাইনাল দেখতে আসা কারেন স্টার্ক বলেন, ‘ট্রাম্প তো দেখছি যেখানে খুশি যেতে পারেন, যে কোনো ম্যাচ দেখতে পারেন।’
শুধু টেনিসভক্তরাই নন, সিক্রেট সার্ভিসের এক মুখপাত্রও স্বীকার করে নিয়েছেন, ট্রাম্পের জন্যই দেরি হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা স্বীকার করছি যে, প্রেসিডেন্টের জন্য বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। সেই কারণেই দর্শকদের স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেরি হয়েছে।’

ট্রাম্প স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর পর কোনও ঘোষণা হয়নি। কিন্তু প্রথম সেটের পর জায়ান্ট স্ক্রিনে তার মুখ ভেসে উঠতেই নানা টিটকিরি শুরু হয়। ইউএস ওপেন আয়োজকদের পক্ষ থেকে অবশ্য আগেই সম্প্রচারকারী চ্যানেলগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে যদি টিটকারি দেওয়া শুরু হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে যেন ‘মিউট’ করে দেওয়া হয়।

ট্রাম্প যে ‘রোলেক্স স্যুট’-এ বসেছিলেন, দ্বিতীয় সেটের পর সেখানে কিছু ভক্ত জড়ো হন। সিনার এবং আলকারাজ যখন খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, তখন চেয়ার আম্পায়ার জেমস কিয়োথাভংকে বলতে হয়, ‘দয়া করে আপনারা আসন গ্রহণ করুন’। তৃতীয় সেটে আলকারাজ যখন ৩-০ গেমে এগিয়ে ছিলেন তখন ট্রাম্প একবার স্যুটের ভিতরে যান। আলকারাজের চ্যাম্পিয়ন হওয়া যখন সময়ের অপেক্ষা, তখন চতুর্থ সেটের সময় তিনি আবার বক্সে আসেন।

ফাইনালের দুই প্রতিপক্ষও ট্রাম্পকে নিয়ে বিরক্ত হয়েছিলেন কি না, জানা নেই। তবে ম্যাচের পর আলকারাজ বা সিনার কেউই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বিশেষ পাত্তা দেননি। কোর্টে তাদের বক্তৃতার সময়ও কেউই ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেননি। ম্যাচ জেতার পর আলকারাজ স্ট্যান্ডে উঠে সোজা তার টিমের কাছে চলে যান। ট্রাম্পের বক্স সেখান থেকে খুব দূরে ছিল না। কিন্তু আলকারজ়কে একবারের জন্যও সে দিকে তাকাতে দেখা যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত জুনে ক্লাব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন চেলসির হাতে ট্রফি তুলে দিলেও নিউইয়র্কে আলকারাজের হাতে ট্রাম্পকে ট্রফি তুলে দিতে দেখা যায়নি।

ইএ/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ওসমান হাদির নিজ জেলায় সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ Dec 19, 2025
img
ছায়ানটে হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ অর্ণবের Dec 19, 2025
img
হাসিনাকে ফেরত না দিলে বাংলাদেশের মানুষ রাজপথেই থাকবে: নাসীরুদ্দীন Dec 19, 2025
img
দক্ষিণ বিভাগের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পরিদর্শনে ভারতের সেনা কর্মকর্তারা Dec 19, 2025
img
দেশে ফিরতে ট্রাভেল পাস পেয়েছেন তারেক রহমান Dec 19, 2025
img
ওসমান হাদির জানাজা ঘিরে সরকারের নির্দেশনা Dec 19, 2025
img
দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে : গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট Dec 19, 2025
img
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন আরো ৩৪৫ বাংলাদেশি Dec 19, 2025
img
হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে নেয়া হচ্ছে ওসমান হাদির মরদেহ Dec 19, 2025
img
শহিদ ওসমান হাদির জানাজা আগামীকাল বেলা আড়াইটায় Dec 19, 2025
img
ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে শিবিরের বিক্ষোভ Dec 19, 2025
img
বিয়ে করবেন তাই আইপিএল খেলবেন না অজি তারকা Dec 19, 2025
img
ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে রংপুরে বিক্ষোভ ও শোক র‌্যালি Dec 19, 2025
img
শহীদ ওসমান হাদিকে কবি নজরুলের সমাধির পাশে সমাহিত করা হবে: ইনকিলাব মঞ্চ Dec 19, 2025
img
গাজীপুরে প্যাকেজিং কারখানায় ভয়াবহ আগুন Dec 19, 2025
img
গণমাধ্যমের ওপর হামলা মানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত : জামায়াতে আমির Dec 19, 2025
img
হাদির মৃত্যুতে স্থগিত কক্সবাজারের বিজয় মেলা Dec 19, 2025
img
সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি: প্রধান উপদেষ্টা Dec 19, 2025
img
হাদির ঘটনার প্রতিবাদে বেনাপোল টু বর্ডার লংমার্চ Dec 19, 2025
img
দেশে গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত করতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে ফ্যাসিস্ট সরকার: সালাহউদ্দিন Dec 19, 2025