রাজপরিবার থেকে ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন কিরেছিলেন প্রিন্স হ্যারি। সম্প্রতি তিনি তার বাবা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর এই প্রথমবার তারা মুখোমুখি হলেন। রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অবস্থান করছেন গত সোমবার থেকে প্রিন্স হ্যারি দেশটিতে অবস্থান করছেন। গতকাল বুধবার রাজা চার্লস স্কটল্যান্ড থেকে ফিরে লন্ডনের বাসভবন ক্ল্যারেন্স হাউসে প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই হ্যারিকে কালো গাড়িতে সেখানে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হ্যারির গাড়ি ক্ল্যারেন্স হাউসে প্রবেশের কিছু সময় পরেই বেরিয়ে যায়। এক ঘণ্টারও কম সময় হ্যারি সেখানে অবস্থান করেন।
এরপর হ্যারি তার ইনভিক্টাস গেমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
তবে হ্যারি এবং তার বড় ভাই, সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়ামের মধ্যে সম্পর্ক এখনো শীতলই রয়ে গেছে। সোমবার দুই ভাই উইন্ডসরের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ছিলেন। এদিন হ্যারি তার দাদি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কবর পরিদর্শন করেন।
তিন বছর আগে ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রানি এলিজাবেথের মৃত্যু হয়। হ্যারি স্ত্রী মেগান বা সন্তানদের ছাড়া তিন দিনের যুক্তরাজ্য সফরে এসে বেশ কয়েকটি দাতব্য অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
গত মে মাসে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি বলেছিলেন, যুক্তরাজ্য সরকার তার পুলিশি নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়ার পর তিনি আর পরিবারকে ব্রিটেনে নিয়ে আসতে নিরাপদ মনে করেন না।
বুধবার সকালে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘সেন্টার ফর ব্লাস্ট ইনজুরি স্টাডিজ’ পরিদর্শন করেন এবং গাজা ও ইউক্রেনে আহত শিশুদের সাহায্যার্থে ৫ লাখ ডলার অনুদান ঘোষণা করেন। তার স্ত্রী মেগানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত আর্চওয়েল ফাউন্ডেশন দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে এই অর্থ দেওয়া হবে।
অর্থটি ব্যবহার হবে আহত শিশুদের চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর (মেডিকেল ইভাকুয়েশন) এবং সংঘাতের কারণে অঙ্গহানি হওয়া শিশুদের জন্য কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির প্রকল্পে। এক বিবৃতিতে হ্যারি বলেন, ‘গাজায় এখন বিশ্বের এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি শিশু অঙ্গহানির শিকার।’ তিনি আরো বলেন, ‘একটি সংস্থা একা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।’
রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়ে ২০২০ সালে মেগানকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যাওয়ার পর থেকে হ্যারি তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাজ্যে তিনবার এসেছিলেন। তবে কোনোবারই চার্লসের সঙ্গে দেখা হয়নি। এমনকি একবার তারা একই সময়ে মাত্র দুই মাইল (তিন কিলোমিটার) দূরে পৃথক অনুষ্ঠানে ছিলেন। রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে হ্যারি বহুবার প্রকাশ্যে রাজপরিবারের সমালোচনা করেছেন।
২০২১ সালের মার্চে ওপরা উইনফ্রের সঙ্গে এক বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারে হ্যারি ও মেগান ইঙ্গিত দেন যে, রাজপরিবারের কিছু সদস্য বর্ণবাদী। পরে তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্পেয়ার’-এ তিনি উইলিয়াম এবং উইলিয়ামের স্ত্রী কেটসহ আরো অনেক বিষয়ে সমালোচনা করেন।
সূত্র : এএফপি
এসএন