যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত পিটার ম্যান্ডেলসনকে বৃহস্পতিবার বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। যুক্তরাষ্ট্রে দণ্ডপ্রাপ্ত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টিনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ই-মেইল ফাঁসের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিন দশকেরও বেশি সময়ের রাজনৈতিক জীবনে আড়ালের কৌশলবিদ হিসেবে পরিচিত ম্যান্ডেলসন। এ সপ্তাহে এপস্টিনের কাছে তার লেখা কিছু চিঠি ও ই-মেইল প্রকাশ্যে আসার পর ব্রিটেনের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত কূটনৈতিক পদ থেকে সরতে বাধ্য হন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে স্টারমার বুধবারও তার রাষ্ট্রদূতকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছিলেন। ট্রাম্পের সঙ্গে ম্যান্ডেলসনের দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, আগামী সপ্তাহে তার রাষ্ট্রীয় সফরের সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও এপস্টিনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যদিও হোয়াইট হাউস তার পক্ষ থেকে কথিত জন্মদিনের শুভেচ্ছা পত্রকে ভুয়া বলে অস্বীকার করেছে।
টনি ব্লেয়ার যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সে সময় লেবার পার্টিকে ক্ষমতায় আনার অন্যতম স্থপতি ম্যান্ডেলসন যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা নথি প্রকাশের পর নতুন করে নজরদারিতে আসেন। ওই নথিতে একটি চিঠি ছিল, যেখানে এপস্টিনকে তিনি ‘আমার সেরা বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ই-মেইলে দেখা গেছে ২০০৮ সালে নাবালিকাকে প্রলুব্ধ করার দায়ে ১৮ মাসের সাজা ঘোষণার আগে এপস্টিনকে আগাম মুক্তির জন্য লড়াই করতে উৎসাহিত করেছিলেন ম্যান্ডেলসন।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ই-মেইলগুলোতে যে তথ্য এসেছে তা পিটার ম্যান্ডেলসনের এপস্টিনের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা ও ব্যাপ্তি সম্পর্কে পূর্বে জানা তথ্যের তুলনায় ভিন্ন। তার প্রথম দণ্ডের ভুল রায় বলে ধরে নিয়ে চ্যালেঞ্জ করার পরামর্শ দেওয়ার বিষয়টি নতুন তথ্য। এটি জানার পরেই স্টারমার ম্যান্ডেলসনের অপসারণ চান।
ম্যান্ডেলসন বুধবার বলেছিলেন, ‘এপস্টিনের সঙ্গে কখনো দেখা করার জন্য আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত এবং যতটা সময় এ সম্পর্ক চালিয়ে গেছি, তা আমার উচিত হয়নি।’ তার এ বক্তব্য প্রাথমিকভাবে স্টারমারকে সন্তুষ্ট করেছিল।
প্রায় অর্ধশতকে প্রথম রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার জন্য স্টারমারের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ম্যান্ডেলসন। তবে ব্লেয়ারের আমলে দুইবার মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করা ম্যান্ডেলসন বিতর্কে নতুন নন। গত সপ্তাহে উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেইনারের কর সংক্রান্ত জটিলতায় পদত্যাগ স্টারমারকে বড় মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনে বাধ্য করে এবং তার লেবার সরকারের পুনর্গঠন পরিকল্পনা ম্লান করে দেয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থবির, সম্ভাব্য করবৃদ্ধির ছায়া এবং নাইজেল ফারাজের পপুলিস্ট রিফর্ম ইউকে পার্টি জরিপে লেবারকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় স্টারমারের দলের মধ্যে অস্থিরতা বাড়ছে।
ইউটি/টিএ