কার্যকরী ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য তিন চাকার যানবাহন ও পথচারী সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর সঠিক গবেষণার মাধ্যমে সমাধান করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ আলোচকরা।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংলামোটরে বিআইপি কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এক সেমিনারে তারা এ কথা বলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের পাশাপাশি আইন প্রয়োগের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ট্রাফিক পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, সিআইটিএমএস সিস্টেমে যদি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তমূলক উপাদানগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তবে এটি স্থানীয় ও জাতীয় উভয় স্তরেই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে আরও কার্যকর ও সহজতর করবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম সোহেল মাহমুদ বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতির পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতনতা বৃদ্ধি ও সুশৃঙ্খল আচরণ অপরিহার্য। ঢাকায় নতুন যানবাহন নিবন্ধনের সুযোগ অব্যাহত থাকলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে কার্যকরভাবে সমন্বয় করা অত্যন্ত কঠিন। ঢাকা শহরের মতো দেশের অন্যান্য শহরেও কার্যকর ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু ও রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি।
পরিবহণ বিশেষজ্ঞ পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ মোহাম্মদ ওয়ালীউল্লাহ বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সিআইটিএমএস একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। এই সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর ও সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি রোড সেফটি, ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্ট এবং সিসিটিভির মাধ্যমে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ-এই বিষয়গুলোর ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। ঢাকা শহরের বর্তমান ‘ট্রাফিক সিগন্যাল সাইকেল’ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ‘গুড প্র্যাকটিস’ এর তুলনায় বেশি। এটি সর্বোচ্চ ২-৩ মিনিটে নামিয়ে আনা উচিত।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান বলেন, কার্যকরী ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য তিন চাকার যানবাহন ও পথচারী সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর সঠিক গবেষণার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। এছাড়াও সব দপ্তর ও সংস্থার মধ্যে পরস্পর দোষারোপের সংস্কৃতি বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন সহজতর হবে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নিলিমা আখতার বলেন, সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতনতা, দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারলে যেকোনো সমস্যা সমাধান সম্ভব। কার্যকরী ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব স্পষ্টীকরণ এবং উক্ত ব্যবস্থাপনার অর্থায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) আবু সুফিয়ান আহমেদ বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনাগত দিক থেকে বিআইপি সহ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে। সবার সহযোগিতায় ডিএমপি ঢাকা শহরে একটি উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খানের সভাপতিত্বে আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
পিএ/টিএ