রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে এ কর্মবিরতি ঘোষণা দেন তারা।
শনিবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল আলিম জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, কতিপয় নামধারী শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষক হেনস্তাকারীদের বহিষ্কার এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব দাবিতে আমরা রোববার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করেছি। শিক্ষার্থীদের এমন কর্মকাণ্ড রাকসু নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করি। আগামীকালের মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
মহানগরীর মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বলেন, ক্যাম্পাসে যাতে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে এজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, রাতের মধ্যে যে কোনো উপায়ে অর্থাৎ নির্বাহী আদেশে হলেও পোষ্য কোটা পুনর্বহালের আদেশ বাতিল করতে হবে। অন্যথায় তারা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ ফয়সাল বাবু বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা একটি মীমাংসিত বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সর্বাত্মক আন্দোলনের মাধ্যমে পোষ্য কোটা বাতিল হয়েছিল। এখন আবার এটাকে সামনে আনা সুস্পষ্টভাবে শিক্ষার্থীদের অধিকার রাকসু বানচালের পাঁয়তারা। যে নাটক মঞ্চায়ন করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে।
এর আগে ‘পৌষ্য কোটা’ বাতিলের দাবিতে একই দিন বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের সামনে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। ওই সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য (উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে) অধ্যাপক মাঈন উদ্দিনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, শনিবার দুপুর আড়াইটায় ‘পৌষ্য কোটা’ বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার পোড়ায়। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টায় তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে। এ সময় তারা উপউপাচার্যের গাড়ি আটক করে এবং সেখানে টাকা ছুড়ে মারে।
পরবর্তীতে তারা উপউপাচার্য মাইন উদ্দিনের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে তিনি তার বাসভবনে প্রবেশ করতে পারেননি। একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে আবারও বাধা দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।