জাতিসংঘের ভূমিকা মানবজাতির জন্য ইতিবাচক ও কল্যাণকর : প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত কয়েক দশকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘাত নিরসন এবং বহু বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘের সীমাবদ্ধতাও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তবু সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘের ভূমিকা মানবজাতির জন্য ইতিবাচক ও কল্যাণকর।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের ইতিহাসে পঞ্চম নারী হিসেবে সাধারণ পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রথমেই আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। এ দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল আপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করবে। একইসঙ্গে জাতিসংঘ সনদের আট দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে এই মহান পরিষদে উপস্থিত সকল সদস্য রাষ্ট্রকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এবারের অধিবেশন অতীত দর্শন ও ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি- উভয়ের জন্যই বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ড. ইউনূস বলেন, গত আট দশক ধরে জাতিসংঘ ধারাবাহিকভাবে তার কর্মপরিধি সম্প্রসারিত করেছে এবং নানা ক্ষেত্রে আরও গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা, মানবাধিকার, বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা ও সমতা প্রসারে জাতিসংঘ অনস্বীকার্য ভূমিকা রেখেছে। জাতিসংঘের কারণেই আজ বিশ্বের ১২০টি দেশের প্রায় ১৩ কোটি বিপদাপন্ন মানুষকে জরুরি খাদ্য ও মৌলিক মানবিক সহায়তা, এবং ৪৫ শতাংশ শিশুকে টিকা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বহুপাক্ষিক সহযোগিতায় বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, টিকা এবং অন্যান্য জীবনরক্ষাকারী সেবা ও সরঞ্জামের যোগান দিয়ে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, পাশাপাশি, গত কয়েক দশকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘাত নিরসন এবং বহু বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘের সীমাবদ্ধতাও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তবু সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘের ভূমিকা মানবজাতির জন্য ইতিবাচক ও কল্যাণকর।’

তিনি আরও বলেন, গত বছর আপনাদের এই মহান সভায় আমি দাঁড়িয়েছিলাম সদ্য গণঅভ্যুত্থান-সংঘটিত একটি দেশের রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা আপনাদের শোনানোর জন্য। আজ আমি এই রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় আমরা কতটুকু অগ্রসর হতে পেরেছি তা বলবো। পৃথিবীর প্রতি ১০০ জনের মধ্যে তিনজনের মতো বাংলাদেশে বাস করে। কিন্তু সে কারণে অথবা ভূ-রাজনৈতিকভাবে বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে বাংলাদেশ রয়েছে বলে আমাদের এ ইতিহাস জানার দরকার, তা কিন্তু নয়। বরং এ কারণে বাংলাদেশের এই বর্ণনাটি গুরুত্বপূর্ণ যে, তা সাধারণ মানুষের অসাধারণ ক্ষমতার উপর আস্থা তৈরি করবে; এ কারণে বর্ণনাটি গুরুত্বপূর্ণ যে, তা বিশ্বের সকল দেশের মধ্যে আশার সঞ্চার করবে- যে সংকট যত গভীরই হোক না কেন বা তার নিরসন যত অসম্ভবই মনে হোক না কেন, কখনও তা থেকে উত্তরণের পথ হারিয়ে যায় না। 

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মামুনের গুম ইস্যুতে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার এনসিপি ও জাতীয় যুবশক্তি: তারিকুল Sep 27, 2025
img
জুলাইকে সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দিতে হবে : বুলবুল Sep 26, 2025
img
দুর্গাপূজায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে : টুকু Sep 26, 2025
img
ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতা না করলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নিতো: শেহবাজ শরীফ Sep 26, 2025
img

এশিয়া কাপ ২০২৫

অভিষেকের অর্ধশতকে শ্রীলঙ্কাকে ২০৩ রানের লক্ষ্য দিল ভারত Sep 26, 2025
টম ক্রুজের জন্য পাগল আমিশা, বললেন বিয়ে করতেও রাজি! Sep 26, 2025
ঘরোয়া ফুটবলে নতুন যুগের সূচনা, নাম বদলে ফিরছে উত্তেজনা Sep 26, 2025
img
অভ্যুত্থান কোনো একক দল করে নাই : জোনায়েদ সাকি Sep 26, 2025
img
জাতিসংঘে ইসরায়েলকে তুলোধুনো করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী Sep 26, 2025
দুর্গাপূজায় এবার ৩৩ হাজার ৩৫৫ পূজামণ্ডপ: পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ Sep 26, 2025
img
জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার পূর্ণাঙ্গ ভাষণ Sep 26, 2025
img

জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টা

রোহিঙ্গাদের প্রান্তিকীকরণের প্রক্রিয়া আর চলতে দেওয়া যাবে না Sep 26, 2025
img
ভারত আমাদের জবাব সবসময় মনে রাখবে : শেহবাজ শরীফ Sep 26, 2025
img
দলমত নির্বিশেষে গণতন্ত্র ও সংস্কার এগিয়ে নেবে বাংলাদেশ : ড. ইউনূস Sep 26, 2025
img

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

'পশ্চিম তীর দখলের পরিণতি সম্পর্কে ট্রাম্পকে সতর্ক করেছে আরব দেশগুলো' Sep 26, 2025
img

জাতিসংঘে ড. ইউনূস

দুর্নীতির উদ্দেশে নেওয়া প্রকল্প অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়ায় Sep 26, 2025
img
গণছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ হোয়াইট হাউসের Sep 26, 2025
img
দিল্লির আধিপত্য মানবে না বাংলাদেশ : ফুয়াদ Sep 26, 2025
img
দেশের পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে শীর্ষ অগ্রাধিকারে রয়েছে : প্রধান উপদেষ্টা Sep 26, 2025
img
প্রকাশ্যে ইসরায়েলের নিন্দা করা নেতারা গোপনে আমাদের ধন্যবাদ জানান: জাতিসংঘে নেতানিয়াহু Sep 26, 2025