ভারতীয় প্ররোচনায় পরিকল্পিতভাবে পাহাড়কে অস্থিতিশীল করা, নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা, ধর্ষণ, হত্যা, বিচ্ছিন্নতাবাদী আদিবাসী ষড়যন্ত্র ও জাতিগত দাঙ্গার সৃষ্টিকারী পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ নিষিদ্ধকরণ ও চাকমা রানী ইয়ান ইয়ানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় ‘সার্বভৌমত্ব সচেতন শিক্ষার্থী জোট’ ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু চত্বর থেকে এই দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে ইব্রাহিম খলিল বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি ধর্ষণকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, সেনাবাহিনীর টহলরত গাড়িতে হামলা চালিয়ে কয়েকজন সেন সদস্যকে রক্তাক্ত করা হয়েছে, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে হামলা চালানো হয়েছে এবং পাহাড়ে জাতিগত দাঙ্গা বাঁধানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রকাশ্যে লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়া হচ্ছে, নিরীহ বাঙালিদের উদ্দেশ্য করে গুলি চালানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পাহাড়ের এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্যে মদদ দেয়া থেকে শুরু করে অর্থায়ন করা ও উসকে দেওয়ার পেছনে কাজ করছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ ও চাকমা রানী ইয়ান ইয়ান। তাদের প্ররোচনায় পাহাড় আজ উত্তপ্ত ও জাতিগত দাঙ্গার মুখোমুখি। সরকারকে অতি দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং রাষ্ট্রদ্রোহী ইয়ান ইয়ানকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা একইসাথে নিরাপত্তাবাহিনী ও পাহাড়ের সাধারণ মানুষের উপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। ঢাবি শিক্ষার্থী জিয়াউল হক বলেন, ধর্ষক যে-ই হোক তাকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। ইতোমধ্যে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত নয়ন শীল নামে এক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, ধর্ষণ ইস্যুকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ইউপিডিএফ ও ইয়ান ইয়ান গং চক্র বাঙালি-অবাঙালি জাতিগত দাঙ্গা উসকে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এই চক্রটি এখন ধর্ষকদের বিচারের দাবি না করে তারা নানান রকম বিচ্ছিন্নতাবাদী স্লোগান দিচ্ছে- পাহাড় থেকে সেনা হটাও, স্বায়ত্তশাসন চাই, আদিবাসী স্বীকৃতি চাই, স্বাধীনতা চাই, জুম্মোল্যান্ড ও কুকি চীন চাই ইত্যাদি রাষ্ট্রদ্রোহী দাবি নিয়ে তারা এখন মাঠে নেমেছে।
আমাদের প্রশ্ন - ধর্ষণবিরোধী মিছিলে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান কেন? এসব স্লোগান দিতে দিতে তারা সেনাবাহিনীর টহলরত গাড়িতে হামলা চালিয়ে সেনা সদস্যদের রক্তাক্ত করার নেপথ্যে কোনো ষড়যন্ত্র লুকানো?
আমরা বিস্ময় প্রকাশ করছি- পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এরূপ সহিংস ও সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীরবতার কারণে। আমরা সরকারের এহেন দায়িত্ব-জ্ঞানহীন নীরবতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অতি দ্রুত সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ইয়ান ইয়ানকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, জনগণ আপনাদের পাশে আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপনারা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ইউপিডিএফসহ সব সশস্ত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযানে নামুন। দেশের ছাত্র-জনতা আপনাদের পাশে থাকবে। ইনশাল্লাহ!
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ শাকিল মিয়া, আব্দুল্লাহ আল মাহিন, আব্দুল বাসিত, রাহাত, জিয়াউল, শিহাবসহ শাহাদাত ফরাজী সাকিব, রিয়াজুল ইসলাম, ইব্রাহিম খলিলসহ অন্যরা।