মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে কাঠগড়ায় দেখে কেঁদেছেন তার স্ত্রী ফারহানা রহমান হ্যাপি। এ সময় হাতে হাত রেখে চুমু খান দুর্জয়ের বোন।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজের আদালতে এ দৃশ্য দেখা যায়।
এদিন দুর্নীতির মামলায় হাজিরা দেওয়াতে দুর্জয়কে কারাগার থেকে সকালে আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়। তাকে দেখতে সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে অপেক্ষায় ছিলেন স্ত্রী হ্যাপি ও তার বোন। দুর্জয়ের আইনজীবী লতিফুর রহমান তাকে এজলাসে তোলার আবেদন জানান। পরে আদালত দুর্জয়কে এজলাসে তোলার আদেশ দেন। দুপুর ১২টার দিকে দুর্জয়কে আদালতে তোলা হয়। এ সময় তার মাথায় হেলমেট, গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং হাতকড়া ছিল।
কাঠগড়ায় নেওয়ার পর তার হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হাতকড়া খুলে ফেলা হয়। এ সময় আদালতে অবস্থান করা দুর্জয়ের স্ত্রী ও বোন কাঠগড়ার কাছে এগিয়ে যান। দুর্জয়ও একটু এগিয়ে আসেন। তারা কথা বলতে থাকেন। এ সময় স্বামীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফারহানা রহমান হ্যাপি।
দুর্জয়ের বোন ভাইয়ের হাত হাত রেখে চুমু খান। মিনিট দুয়েক কথা বলার পর পুলিশ সদস্যরা তাদের সরে যেতে বলেন। পরে তারা সেখানে থেকে সরে যান।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক দুর্জয় কাঠগড়ায় আসামিদের জন্য রাখা বেঞ্চে গিয়ে বসেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামলার শুনানি হয়। দুর্জয়ের আইনজীবী মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে একান্তে কথা বলার অনুমতি চান। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী তাকে দুর্জয়ের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দেন।
এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা দুদক প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৭ জানুয়ারি দিন ঠিক করেছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে দুর্জয়কে আবার হাজতখানায় নেওয়া হয়। এরপর কারাগারে নেওয়ার জন্য দুর্জয়কে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে হাতের ইশারায় স্ত্রী ও বোনকে বিদায় জানান তিনি।
অবৈধভাবে সোয়া ১১ কোটি টাকা অর্জনের অভিযোগে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর দুদকের পরিচালক আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এ মামলায় গত ২৯ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে ২ জুলাই রাতে ঢাকার লালমাটিয়া থেকে দুর্জয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তিনি কারাগারেই রয়েছেন।
মামলার বিবরণ অনুযাযী, ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্জয় মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের কাছ থেকে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা নেন। তার নিজের নামে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১০টি ব্যাংক হিসাব ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৯টি হিসাবে মোট ৪৭ কোটি ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯০ টাকা জমা হয়েছে। সেখান থেকে ৪৬ কোটি ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৯৬০ টাকা তোলা হয়েছে, যা সন্দেহজনক। ‘দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে’ প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার জন্য তিনি স্থানান্তর ও হস্তান্তর করেছেন।
এসএন