মার্কিন অভিযানে আইএস প্রধান বাগদাদি নিহত: ট্রাম্প

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সেই শীর্ষনেতা আবু বকর আল-বাগদাদি যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীর একটি অভিযানে নিহত হয়েছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশ সময় রোববার রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী আবু বকর আল-বাগদাদিকে বিচারের আওতায় এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা। শনিবার রাতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় রাতের বেলায় একটি অভিযান চালানো হয়। সে সময় আবু বকর আল-বাগদাদি নিজের শরীরে থাকা সুইসাইড ভেস্টের বিস্ফোরণ ঘটান।

তিনি বলেছেন, অভিযানে কোনো মার্কিন সেনা নিহত হয়নি, বরং আল-বাগদাদির বেশ কয়েকজন অনুসারী নিহত হয়েছে।

এর আগে মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, কথিত ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর পলাতক নেতা আবু বকর আল বাগদাদি যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীর একটি অভিযানে নিহত হয়েছেন।

গত রাতে ট্রাম্পও এক টুইটে পরোক্ষভাবে এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বাগদাদিকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ২০১১ সালে মার্কিন সরকার পুরষ্কার ঘোষণা দেয়। পরে পুরষ্কারের অঙ্ক বাড়িয়ে ২৫ মিলিয়ন ডলার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, উত্তর পূর্ব সিরিয়ায় আইএস নেতার খোঁজে অভিযান চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী। অভিযানটির অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে নিউজউইক লিখেছে, 'নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের' ভিত্তিতে বিশেষ বাহিনী এই অভিযানটি পরিচালনা করেছে।

এর আগে বেশ কয়েকটি ঘটনায় ভুলভাবে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, আইএস নেতা নিহত হয়েছেন।

কে এই বাগদাদি?

আবু বকর আল-বাগদাদির আসল পরিচয় কী তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আল বাগদাদি তার আসল নাম নয় বলে মনে করা হয়।

নাম আবু বকর আল-বাগদাদি - তবে তার আসল নাম ইব্রাহিম আওয়াদ আল-বদরি। ধারণা করা হয়, ১৯৭১ সালে ইরাকের সামারার কাছে একটি সুন্নি পরিবারে তার জন্ম।

অল্প বয়সে গভীরভাবে ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তিনি ইসলামিক স্টাডিজে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর কোরানিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০০৪ সালে ইঙ্গ-মার্কিন আক্রমণের শিকার হয়ে ক্যাম্প বুকাতে বন্দী হন তিনি। সেখানে তিনি প্রাক্তন ইরাকী গোয়েন্দা কর্মকর্তাসহ অন্য বন্দীদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

২০০৩ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে সামরিক অভিযান চলে, তখন আল বাগদাদি বাগদাদের কোনো একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন বলে দাবি করা হয় কোনো কোনো প্রতিবেদনে।

অনেকের বিশ্বাস, সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলেই আল বাগদাদি জঙ্গি জিহাদীতে পরিণত হয়েছিলেন। তবে অন্য অনেকের ধারণা, যখন তাকে দক্ষিণ ইরাকে একটি মার্কিন সামরিক ক্যাম্পে চার বছর আটকে রাখা হয়েছিল তখনই আসলে আল বাগদাদি জঙ্গিবাদে দীক্ষা নেন। এই ক্যাম্পে অনেক আল কায়েদা কমান্ডারকে বন্দী রাখা হয়েছিল।

আল বাগদাদি পরে ইরাকে আল কায়েদার নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। পরে অবশ্য ইরাকের আল কায়েদা নিজেদেরকে ২০১০ সালে 'ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভান্ট' বলে ঘোষণা করে।

২০১১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র আল বাগদাদিকে সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা করে। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভাঙা হাত নিয়েই কানের লাল গালিচায় মুগ্ধতা ছড়ালেন ঐশ্বরিয়া May 17, 2024
img
১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য May 17, 2024
img
বাজারে ডিমের উত্তাপ বাড়ছেই, কমেনি সবজির দাম May 17, 2024
img
যারা একবেলা ভাত খেতে পারতো না, তারা এখন চারবেলা খায়: প্রধানমন্ত্রী May 17, 2024
img
র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র May 17, 2024
img
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি প্রকাশ, বাংলাদেশ পাচ্ছে দুই ম্যাচ May 17, 2024
img
ঢাকার বাতাস আজও খুব 'অস্বাস্থ্যকর' May 17, 2024
img
রাজধানীতে ১০ তলা ভবন থেকে পড়ে ২ নির্মাণশ্রমিক নিহত May 17, 2024
img
৬ তারিখে বাজেট দেবো, বাস্তবায়নও করবো : প্রধানমন্ত্রী May 17, 2024
img
বিশ্বকাপ মিশনে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল May 17, 2024