কমলার পুষ্টিগুণ

ফলের জগতে একটি প্রিয় নাম হচ্ছে কমলা। টক মিষ্টি স্বাদের এই ফলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কমলা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Citrus reticulata যা Rutaceae নামে পরিচিত। কমলাকে ইংরেজিতে ‘Mandarin orange’, ‘Mandarin’ এবং ‘Mandarine’ বলা হয়।

মলিকিউলার গবেষণায় বলা হয়েছে যে, জাম্বুরা, মাল্টা ইত্যাদি প্রাকৃতিক-শংকরায়িত সাইট্রাস ফলসমূহ কমলা থেকে উদ্ভূত এবং কমলাই একমাত্র মিষ্টি স্বাদের আদি সাইট্রাস ফল। গোলগাল আকৃতির এই ফলটি সবাই খেতে পছন্দ করেন।

পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ১০০ গ্রাম আহার উপযোগী কমলায় রয়েছে- ভিটামিন বি ০.৮ মিলিগ্রাম, সি ৪৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৩০০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৩ মিলিগ্রাম। প্রতিদিন যতটুকু ভিটামিন সি প্রয়োজন তার প্রায় সবটাই একটি কমলা থেকে সরবরাহ হতে পারে।

কমলায় আছে শক্তি সরবরাহকারী চর্বিমুক্ত ৮০ ক্যালোরি, যা শক্তির ধাপগুলোর জন্য জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। কমলায় আছে প্রচুর ভিটামিন-সি, যা ক্যান্সার প্রতিরোধক, স্বাস্থ্যকর, রক্ত প্রস্ততকারক এবং ক্ষত আরোগ্যকারী হিসেবে খুবই উপকারী। কমলা 'বি' ভিটামিন ফোলেটের খুব ভালো উৎস, যা জন্মগত ত্রুটি এবং হৃদরোগের জন্য ভালো কাজ করে।

চলুন জেনে নিন ভিটামিনে ভরপুর কমলার কিছু পুষ্টিগুণ-

ত্বকের জন্য ভালো
কমলার ভিটামিন ত্বক নমীয়, কোমল ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। প্রসাধনী সামগ্রী তৈরি করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কমলা ব্যবহার করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে
কমলা ‘ক্যালরি ফ্রি’ ফল হিসেবে পরিচিত, আর এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই কমলার পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে সাহায্য করে।

ওষুধ শোষণ
শরীরে ওষুধ গ্রহণে সাহায্য করে কমলা। এই ফলের রস ওষুধের বায়োকেমিক্যাল ও সাইকলজিক্যাল প্রভাব শরীরে গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।

দৃষ্টিশক্তি
চোখের জন্য ভিটামিন-এ দরকার। আর কমলায় বেশ ভালো পরিমাণে ভিটামিন-এ রয়েছে।

হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
কমলায় আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান, যা হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধক
কমলায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনের পাশাপাশি রয়েছে আলফা ও বেটা ক্যারোটিনের মতো ফ্ল্যাভনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ, যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

কমলার উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণ হচ্ছে ফ্ল্যাভনয়েড, যা ফুসফুস ও ক্যাভিটি ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর।

শর্করা নিয়ন্ত্রণ
কমলার খোসায় চিনির পরিমাণ নেই বললেই চলে, তাই এটা রক্তে শর্করার মাত্রায় প্রভাব ফেলে। ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক সিন্ড্রম রোগীদের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়। তাই কমলার পুষ্টিগুণ ডায়াবেটিকদের জন্য উপকারী।

সতর্কতা
যাদের ত্বকে উচ্চমাত্রার অ্যালার্জি রয়েছে তাদের কমলার খোসা ত্বকের যত্নে ব্যবহার না করাই ভালো। এছাড়া কমলার খোসাবাটা বা কমলার রস কোনোটাই ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করবেন না, কারণ অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে কমলার রস ব্যবহারের ফলে ত্বক পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ