বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষণা প্রকল্পের চুরি হওয়া ১৩টি ভেড়ার মধ্যে ৪টি উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে এই ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার টঙ্গি পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভেড়াগুলো উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন- টঙ্গি পশ্চিম থানা এলাকার মৃত হোসেন সিকদারের ছেলে মো. আবুল কালাম (৪৮) এবং একই এলাকার মৃত কসর উদ্দিন শেখের ছেলে মো. হিরা মিয়া (৩৫)।
এদিন বিকেল ৩টায় কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম দেশের একটি গণমাধ্যমকে চুরি হওয়া ভেড়া ও গ্রেপ্তার দুই চোরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের গেট সংলগ্ন খামার থেকে এসব ভেড়া চুরি হয়। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খালিদ। তিনি জানান, একটি চোরচক্র ভেড়াগুলো চুরি করে গাজীপুরের টঙ্গি এলাকায় নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে ৬টি ভেড়া এক ব্যক্তির কাছে এবং বাকি ৭টি ভেড়া বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেওয়া হয়।
এসআই খালিদ জানান, তথ্য পেয়ে অভিযান চালিয়ে সেই ৬টির মধ্যে ৪টি ভেড়া উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুটি মারা গেছে। অন্য ৭টি ভেড়া উদ্ধারে অভিযান চলছে। এছাড়া এই ঘটনায় আরও যারা জড়িত, তাদের ধরতেও তৎপরতা চলছে।
ভেড়া উদ্ধারের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গবেষণার দায়িত্বে থাকা বাকৃবির সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারি। তিনি বলেন, আমি খুব খুশি। এ গবেষণায় আমি গোল্ড মেডেল পেয়েছি। এই জাতের ভেড়া চর ও হাওর এলাকায় বেশ পরিচিত। উদ্ধার হওয়ায় গবেষণা কাজ এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারি ভেড়ার উপর গবেষণার জন্য বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেস (বিএএস) থেকে গোল্ড মেডেল পেয়েছেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল মাল্টিপল ওভুলেশন এবং এমব্রায়ো ট্রান্সফার।
তিনি ২০১১ সাল থেকে ভেড়ার ভ্রূণ উৎপাদন ও ভ্রূণ স্থানান্তর বিষয়ে গবেষণা করে আসছেন। দেশে তিনিই প্রথম ভ্রূণ স্থানান্তরের মাধ্যমে ভেড়ার বাচ্চা উৎপাদনে সফল হন। সুপার ওভুলেশনের মাধ্যমে বছরে ২৫-৩০টি উন্নত প্রজাতির কাঙ্ক্ষিত ভ্রূণ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
তার এই গবেষণা দেশে আমিষের চাহিদা মেটানো এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এমকে/টিকে