সংবাদ সম্মেলনে হংকং চায়না কোচ এস্টেবান ওয়েস্টনকে ঘিরে ছুটে গেলো সাংবাদিকদের অনেক প্রশ্ন। একজন তো জানতে চাইলেন, আপনার দলে হামজা চৌধুরী থাকলে কোথায় খেলাতেন? জবাবে যেন ‘মাইন্ড গেম’ খেলতে চাইলেন ব্রিটিশ কোচ। সরাসরি বলেছেন, ‘অন দ্য বেঞ্চ’। বোঝাই যাচ্ছে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বাংলাদেশের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই ম্যাচের আগে কথার লড়াই জমিয়ে দিতে চাইলেন হংকং কোচ।
হামজা সম্পর্কে অবশ্য ভালোভাবেই খোঁজ-খবর নিয়ে এসেছেন হংকং কোচ ওয়েস্টন। এর আগে হামজাকে নিয়ে বিশেষ কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানালেন তিনি, ‘না, বিশেষ কোনও পরিকল্পনা নেই। আমরা তার সামর্থ্য সম্পর্কে জানি। ইংল্যান্ডে সে ডিফেন্ডার, রাইট-ব্যাক হিসেবে খেলে, তবে মিডফিল্ডেও খেলতে পারে। কিন্তু একটা দল একজন খেলোয়াড় দিয়ে হয় না। আমরাও কিছু ভালো খেলোয়াড় রাখি, কিন্তু দলীয় খেলায় বিশ্বাস করি, সবার অবদান গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের সব খেলোয়াড় এবং বদলি খেলোয়াড়দের কাজে লাগাবো। মূল বিষয় হলো দল।’
দলের প্রস্তুতি নিয়ে কোচ এস্টেবান ওয়েস্টন বলেছেন, ‘আমরা যতটা সম্ভব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। অবশ্য খেলোয়াড়দের আমরা সোমবার দুপুরে পেয়েছি, প্রস্তুতিতে একটু দেরি হয়েছে—এটা স্বাভাবিক। আমাদের খেলোয়াড়রা চায়না ও হংকংয়ে খেলে, তাই আমাদের দ্রুত প্রস্তুতি নিতে হয়।’
হংকংয়ের র্যাঙ্কিং ১৪৬, বাংলাদেশের ১৮৪। লাল-সবুজদের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও এসব নিয়ে ভাবছেন না কোচ। বরং বাংলাদেশকে প্রকারান্তরে সমীহ করছেন ওয়েস্টন, ‘র্যাঙ্কিং নিয়ে ভাবি না, উভয় দলই উন্নতির পথে। বাংলাদেশ এখনকার চেয়ে ১৮ মাস আগেও আলাদা অবস্থানে ছিল।
আমরা লিখটেনস্টাইনের (২০৩ নম্বরে) কাছে হেরেছিলাম, যারা ইউরোপে খেলে। তাই বলা যায় র্যাঙ্কিং নয়, আমরা প্রতিপক্ষকে দেখি, খেলোয়াড়দের দেখি। ফুটবলে অনেক কিছু ভূমিকা রাখে। সব কিছু মিলে একটা ম্যাচ হয়। দুই দলের মধ্যে বিশাল পার্থক্য নেই।’
ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠে মঙ্গলবার প্রথম অনুশীলন করেছে হংকং। মাঠ নিয়ে অসন্তুষ্ট কোচ, ‘আমি মনে করি পিচ আরও ভালো হতে পারতো। বাংলাদেশ প্রতিদিন মাঠ ব্যবহার করেছে, যা নিয়মবিরুদ্ধ। এএফসি ম্যাচের আগে ২-৩ দিন মাঠ ব্যবহার না করাই উচিত, কিন্তু তারা তা করেনি। ফলে মাঠের মান খারাপ হয়েছে। তবে আমরা এটা নিয়ে খুব একটা ভাবছি না। উভয় দলকেই এই মাঠে খেলতে হবে। নিজেদের খেলা দিয়েই ম্যাচে টিকে থাকবো।’
হংকংয়ের 'বহুজাতিক' খেলোয়াড় প্রশ্নে ব্রিটিশ কোচ সরাসরি বললেন, ‘আমার দলে ২৩ জন হংকং পাসপোর্টধারী খেলোয়াড় রয়েছে। তারা নিয়ম মেনে দলে এসেছে। জাতি নিয়ে আমরা চিন্তা করি না। খেলোয়াড়দের আমাদের স্টাইলে মানিয়ে নিতে হয়। সেটা হলো– কঠোর পরিশ্রম, দলগত খেলা, প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা। আর এটা নির্ভর করে না আপনি কোন দেশ থেকে এসেছেন।’
কাল ম্যাচে কী হতে পারে? এমন প্রশ্নে হংকং কোচ বলেছেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) ভালো দল। আমরা চাই ভালো পারফর্ম করতে। যদি মনোযোগ হারাই, ভুল মনোভাব নিয়ে নামি, তাহলে আমরা হারবো—এইটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। আমাদের ভালো খেলতে হবে, তাহলেই বাংলাদেশকে কঠিন লড়াই দেওয়া যাবে। তবে খেলার দিন কেমন যাবে, সেটা আমার নিয়ন্ত্রণে নেই।'
এমআর