১০ ব্যাংক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১০৭ মিলিয়ন ডলার ক্রয়

রেমিট্যান্স-রপ্তানি ইতিবাচক থাকায় বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরাসরি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১০৭ মিলিয়ন (১ দশমকি শূন্য ৭ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মাল্টিপল প্রাইস অকশন (এমপিএ) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এ ক্রয়ে ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট ছিল প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৮০ পয়সা। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২০৮ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার ( ১.০৮ বিলিয়ন ডলার) কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ্য নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, একদিকে ডলারের জোগান বেড়েছে, অন্যদিকে চাহিদা কমে আসায় দাম কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতায় ছিল। এ অবস্থায় ডলারের দাম কমে গেলে রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স পাঠানো ব্যক্তিরা নিরুৎসাহী হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে ডলারের দর একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামতে না দেওয়ার লক্ষ্যেই বাজারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।

গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে বাজার থেকে ডলার কিনে এবং কখনো বিক্রি করে দর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও পূর্বে বড় পরিমাণ ডলার বিক্রি করা হয়েছিল, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে রিজার্ভে চাপ কমাতে ধাপে ধাপে ডলার কেনার পথে হাঁটছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেনাকাটার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কিছুটা শক্তিশালী হবে বলে আশা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে চালু হওয়া মার্কেটপ্রাইস অ্যাপ্রোচ (এমপিএ) পদ্ধতিতে ডলার কেনা-বেচার ফলে একটি স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক দাম নির্ধারণ সম্ভব হচ্ছে, যা ব্যাংকগুলোর জন্যও ইতিবাচক। তবে তারা মনে করছেন, ডলার বাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আনতে আমদানি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বাড়ানো দরকার।

এছাড়া রিজার্ভের ওপর চাপ এবং বৈদেশিক লেনদেন ঘাটতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিটি পদক্ষেপ এখন বাজারে বড় প্রভাব ফেলছে। তাই এমন সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে বলছেন বিশ্লেষকেরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ অক্টোবরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ এখন ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম–৬ অনুযায়ী রিজার্ভ আছে ২৬ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৭৫৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের (৭.৫৮ বিলিয়ন) সমপরিমাণ বৈদেশিক অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। রেমিট্যান্স আহরণের এ পরিমাণ আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬৫৪ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার।

আইকে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৩ প্রস্তাব, ১১ অধ্যাদেশে অনুমোদন দিল উপদেষ্টা পরিষদ Oct 09, 2025
img
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনে অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার: প্রধান উপদেষ্টা Oct 09, 2025
img
নারায়ণগঞ্জে মহাসড়ক থেকে যাত্রীবাহী বাস খাদে, আহত ১০ Oct 09, 2025
img

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূতের সঙ্গে বৈঠক

নির্বাচন শেষে আগের ভূমিকায় ফিরতে চান প্রধান উপদেষ্টা Oct 09, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র এ যুদ্ধ বন্ধ করেছে, বললেন ট্রাম্প Oct 09, 2025
img
চসিকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ Oct 09, 2025
img
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ২৭ বিলিয়ন ডলার Oct 09, 2025
img
শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ৪-৩ ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ Oct 09, 2025
img
টেলিভিশন অনুমোদন নিয়ে যে হাহাকার তা পুরাতন বন্দোবস্তের হাহাকার: উপদেষ্টা মাহফুজ Oct 09, 2025
img
হু হু করে বাড়ছে সোনার দাম, এবার নতুন রেকর্ড Oct 09, 2025
img
এবার ভারতকে ক্ষেপণাস্ত্র দেবে যুক্তরাজ্য Oct 09, 2025
img
এই বিরতি বয়ে আনুক শান্তির সুবাতাস : মিজানুর রহমান আজহারি Oct 09, 2025
img
৪৯তম বিসিএস: প্রবেশপত্র নিয়ে পিএসসির জরুরি নির্দেশনা Oct 09, 2025
img
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস Oct 09, 2025
img
ঘুসিতে বিমানের মনিটর ভাঙার ঘটনায় তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিল কর্তৃপক্ষ Oct 09, 2025
img
লিবিয়ার মোট অভিবাসীর ২ শতাংশ বাংলাদেশি Oct 09, 2025
img

আনোয়ারায় সরওয়ার জামাল

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের রূপরেখা Oct 09, 2025
img
প্রকৌশলীদের পেশাগত দাবি পূরণের জন্য সময় পেলো সুপারিশ কমিটি Oct 09, 2025
img
হাসপাতালে সেবা নিতে গিয়ে নিজের পরিচয় দিতে বাধ্য হন সাইফ Oct 09, 2025
img
আলোচনা ইতিবাচক, আশা করি শাপলা পাবো: নাসীরুদ্দীন Oct 09, 2025