বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশনের পাশাপাশি কালো পতাকা মিছিল করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা। আজ রবিবার দুপুর ১২টায় শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি হাতে ভুখা মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তাঁরা।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।
আজ (গতকাল) কালো পতাকা হাতে সব শিক্ষক রাস্তায় নেমে আসেন। রবিবার আমরা থালা-বাটি হাতে ভুখা মিছিল করব। প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরা বাড়ি ফিরব না।’ এর আগে গতকাল দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
মিছিলটি দোয়েল চত্বর হয়ে কদম ফোয়ারায় গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে করে। এ সময় তাঁরা শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। ‘সি আর আবরার, আর নেই দরকার’এই স্লোগান দিতেও শোনা যায়।
সমাবেশে শিক্ষকরা বলেন, ‘দেশের মন্ত্রী, আমলাদের বাড়িভাড়া শুধু নয়, পুরো বাড়িই লাগে।
কিন্তু আমরা ন্যায্য বাড়িভাড়া পাচ্ছি না। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঢাকার রাস্তায় শুয়ে, বসে ও ঘুমিয়ে দাবির কথা জানাচ্ছি, কিন্তু শোনার কেউ নেই। আমাদের অল্প এই দাবি মেনে নিতে না পারলে শিক্ষা উপদেষ্টার আর থাকার প্রয়োজন নেই।’ শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সমাবেশে বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের (শিক্ষক) দাবি আদায়ে যদি সচিবালয়, যমুনা ঘেরাও করা লাগে, আপনাদের সঙ্গে আমরাও যাব।
আপনাদের দাবি আদায়ে কোনো টালবাহানা সহ্য করা হবে না। গণঅধিকার পরিষদ আপনাদের সঙ্গে আছে, আমরা আপনাদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’ রাশেদ খাঁন বলেন, ‘শিক্ষকরা দুর্নীতি করে না, অন্যায় করে না। কিন্তু আমলাদের অনেকে দুর্নীতি করে। তারা গাড়ি পায়, বাসা পায়, শিক্ষকরা কী পায়? শিক্ষকদের বেতন-ভাতা অবশ্যই বাড়াতে হবে।’
এদিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক-কর্মচারীদের আমরণ অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দুজন। তাঁদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থ হওয়া দুই শিক্ষক-কর্মচারী হলেন হাবিবুর রহমান ও ঝর্ণা। এঁদের মধ্যে হাবিবুর রহমান বরগুনার একটি প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। ঝর্ণা সহকারী শিক্ষক। বিষয়টি নিশ্চিত করে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবুল বাশার বলেন, ‘তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত দুই সহযোদ্ধা অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
জানা যায়, বাড়িভাড়া ভাতা ২০ শতাংশ, চিকিত্সা ভাতা এক হাজার ৫০০ টাকা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উত্সব ভাতার দাবিতে গত ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষকরা। ওই দিন শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। তবে পুলিশ বাধা দিলে শিক্ষক-কর্মচারীরা সেদিন দুপুর থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে অবস্থান নেন। গত মঙ্গলবার সচিবালয় অভিমুখে লং মার্চ কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ শিক্ষকদের বাধা দেয়। গত বুধবার তাঁরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। আন্দোলনের ষষ্ঠ দিন গত শুক্রবার থেকে শহীদ মিনারে শতাধিক শিক্ষক অনশন শুরু করেন।
এসএস/টিএ