ফের পাক-আফগান সীমান্তে সংঘর্ষে প্রাণ গেল ২৫ জনের

আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকায় নতুন করে সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন পাকিস্তানি সেনা ও ২৫ জন সশস্ত্র আফগানি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এমন সময় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যখন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই দেশ শান্তি আলোচনায় বসেছে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গত শুক্রবার ও শনিবার আফগানিস্তান থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার কুররম ও উত্তর ওয়াজিরিস্তানে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি।

সেনাবাহিনীর দাবি, আফগান ভূখণ্ডে সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে তালেবান প্রশাসন।

রোববার (২৬ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে পাকিস্তান জানায়, এসব অনুপ্রবেশ প্রচেষ্টা “নিজ ভূখণ্ড থেকে সন্ত্রাস দমনে” কাবুলের অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

আফগান তালেবান সরকার এখনো এই ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে অতীতে তারা এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এসেছে এবং বরং পাকিস্তানের বিমান হামলাকে আফগান সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছে।

উভয় দেশের প্রতিনিধি দল শনিবার ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছে, যেখানে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় নতুন শান্তি আলোচনার উদ্যোগ চলছে। এর আগে, দোহায় উভয় পক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়, যা ২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখলের পর সীমান্তে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের অবসান ঘটায়। চলতি মাসের শুরুতে হওয়া সেই সংঘর্ষে ডজনখানেক মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছিলেন।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর আছে এবং কাবুলে শান্তির বিষয়ে আগ্রহী বলেই মনে হচ্ছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ইস্তাম্বুলের আলোচনা ব্যর্থ হলে পাকিস্তান 'যুদ্ধের' বিকল্প বিবেচনা করবে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সপ্তাহান্তে সীমান্তে অনুপ্রবেশে জড়িত ব্যক্তিরা তথাকথিত 'ফিতনা আল-খারেজ' নামের গোষ্ঠীর সদস্য, যাদের তারা বিদেশি মদদপুষ্ট আদর্শিক যোদ্ধা হিসেবে বর্ণনা করেছে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করেন। মালয়েশিয়ায় আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সঙ্কট তিনি 'খুব দ্রুত সমাধান করতে পারবেন' এবং চলমান আলোচনার বিষয়ে তিনি অবহিত হয়েছেন।

সূত্র: আল জাজিরা, আরব নিউজ।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন হয়নি : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী Oct 27, 2025
img
সাবেক যুগ্ম সচিব কিবরিয়া মজুমদারের পাঁচ ব্যাংক হিসাব জব্দ Oct 27, 2025
img
’বিতর্কিত উপদেষ্টা’ নিয়ে জামায়াত-এনসিপির এত মিল কেন? প্রশ্ন জাহেদ উর রহমানের Oct 27, 2025
img
ইয়ামালের হাতে যাচ্ছে পিকে-শাকিরার পুরনো প্রাসাদ Oct 27, 2025
img
ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেওয়া হবে : জামায়াত আমির Oct 27, 2025
img
ড্যাফোডিলের হামলায় সিটি ইউনিভার্সিটিতে ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে : ভিসি লুৎফর রহমান Oct 27, 2025
img
শাপলা প্রতীক নিয়েই আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব : সারজিস আলম Oct 27, 2025
img
উত্তরা ইপিজেডের ৪ কারখানা বন্ধ ঘোষণা Oct 27, 2025
img
সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের আসামিদের দেশত্যাগ রোধে হিলি চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা Oct 27, 2025
img
ডাকসুর পদবি ব্যবহার করে শিক্ষকদের ওপর মবতন্ত্র প্রয়োগ করা অনাকাঙ্ক্ষিত : নাছির Oct 27, 2025
img
মাহফুজ তার বক্তব্যে প্রমাণ করেছেন, তিনি ওই পদের যোগ্য নন : মাসুদ কামাল Oct 27, 2025
img
না ফেরার দেশে ছাতকের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আলী ইনসান Oct 27, 2025
img
নেতানিয়াহু সরকার থাকা অবস্থায় সে দেশে কনসার্ট করবে না 'রেডিওহেড' Oct 27, 2025
img
এমআরআই পরীক্ষা করেছেন ট্রাম্প, সবকিছু ঠিক আছে দাবি Oct 27, 2025
img
পাকিস্তানে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চায় ঢাকা Oct 27, 2025
img
বিয়ে ছাড়াই ভালো আছি: ইশা সাহা Oct 27, 2025
img
নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Oct 27, 2025
img
পুত্রসন্তানের বাবা হলেন ‘লিডার’ ছবির পরিচালক তপু খান Oct 27, 2025
img
ছেলেকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নীলা চৌধুরী Oct 27, 2025
দরিদ্র হলেই কি জান্নাতে যাওয়া যাবে? | ইসলামিক প্রশ্নোত্তর Oct 27, 2025