গণভোট জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে হবে এবং এটি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব। তিনি বলেন, ইউনূস সরকার আর আলী রীয়াজের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বাংলাদেশের ইতিহাসের পার্ট হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক পোস্টে এ কথা লেখেন।
আজ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে গণভোট হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিধান গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে রয়েছে সনদের সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবের ওপর গণভোট অনুষ্ঠান এবং পরবর্তীতে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত।
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর রাতে ফেসবুকে মির্জা গালিব লেখেন-
‘এক, যদিও গণভোটে চারটা প্রশ্ন থাকবে, কিন্তু হ্যাঁ/না ভোট সবগুলোর জন্য একসঙ্গে একটা। কাজেই এইটা মূলত একটা প্যাকেজ। ডিসেন্টগুলো আলাদা করে একটা আলাদা প্যাকেজ করার যে আইডিয়া- এইটা এইখানে অনুপস্থিত।
দুই, তবে অন্তর্বর্তী সরকার গণভোটের প্রশ্নটাকে যে চার ভাগে ভাগ করল, এর পেছনে অন্য একটা ফিলসফি কাজ করছে। কিছু বিষয়কে তারা নন-নেগশিয়েবল হিসেবে ধরে নিয়ে এক প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে দিয়েছে। আর এর বাইরের বিষয় পরের পার্লামেন্টের উপর ছেড়ে দিয়েছে। যেমন, উচ্চ কক্ষে পিআর, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন গঠন- এইগুলো নন-নেগোশিয়েবল, ফলে গণভোটে এক প্যাকেজের মধ্যেই যাবে। এ রকম আরও কিছু নন-নেগোশিয়েবল ইস্যু আছে। এর বাইরের বিষয়গুলো পরের পার্লামেন্টের কাছে যাবে, চতুর্থ প্রশ্নে এইটা বলা আছে ‘জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে’।
তিন, আমার মতে দুইটা প্যাকেজ হইলে সবচাইতে ভালো হতো। কিন্তু যে বিষয়গুলোকে সরকার নন-নেগশিয়েবল বলে মনে করছে, এইগুলোকে আমি নন-নেগোশিয়েবল বলেই মনে করি। ফলে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত খুব খারাপ হইছে বলে মনে করি না।
চার, গণভোট জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে হবে। এইটা নিয়ে আমি কোনো সমস্যা দেখি না। আইনি কাঠামোটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এইটা হয়ে গেছে। এখন গণভোট নির্বাচনের সঙ্গে হইলে বিএনপি কিছুটা একোমোডেটেড ফিল করবে- এইটা বরং ন্যাশনাল ইউনিটির জন্য ভালো।
পাঁচ, জামায়াত এবং এনসিপি যে সংস্কার চাইছে, তার প্রায় পুরোটাই বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। জামায়াতের উচিত নিম্নকক্ষে পিআর আর গণভোটের তারিখ আগায়ে আনার দাবি কম্প্রোমাইস করা। নিম্নকক্ষের পিআর আমাদের জন্য মোটেও ভালো হবে না। আর গণভোট আগে হইলে হয়ত কিছুটা ভালো হতো, আর একসঙ্গে হইলেও অনেক প্রব্লেম হয়ে যাবে- এমন কিছু না।
ছয়, বিএনপি পুরো সংস্কার প্রক্রিয়ায় উলটা রাস্তায় হাঁটছে। তারা রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে ডমিনেট করতে পারছে না। বিএনপির উচিত সংস্কার ইস্যুতে তাদের পজিশান দলীয় ভাবে রিভিউ করা। ইউনূস সরকার আর আলী রীয়াজের এ কমিশন বাংলাদেশের ইতিহাসের পার্ট হয়ে উঠল। দুই চারটা চোরাগুপ্তা হামলা করে আওয়ামী লীগ নিজের আরও ক্ষতি করা বাদে আর কিছু করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। জুলাই আর আমাদের এ ন্যাশন বিল্ডিং বাংলাদেশকে বদলে দেবে ইনশাআল্লাহ।’
এসএস/টিএ