সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : এ এম এম নাসির উদ্দিন

একটি সুন্দর, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য জাতি ও জনগণের কাছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ইসির প্রণীত আচরণবিধি কঠোরভাবে পরিপালনে রাজনৈতিক দল ও জাতীয় নেতাদের কাছে আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন সিইসি।

রোববার (১৫ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে শুভেচ্ছা বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিইসি।

সংলাপ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে সিইসি বলেন, মূলত দুটি প্রধান উদ্দেশ্য নিয়ে দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রথমত, ইসির প্রণীত আচরণবিধি যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল কর্তৃক সঠিকভাবে পরিপালিত হয়, সেই বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া। দ্বিতীয়ত, একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সার্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, আমরা একটা সুন্দর, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটা আমাদের কমিটমেন্ট টু দ্য নেশন। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকেই এটা বলে আসছি।

তিনি বলেন, নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর অনেকগুলো বড় ও অতিরিক্ত কাজ করতে হয়েছে। একই সঙ্গে, এর আগে গঠিত ইলেক্টোরাল রিফর্মস কমিশন এবং ঐকমত্য কমিশন বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে ইসির কাজ কিছুটা হালকা করে দিয়েছে। এছাড়া, জাতীয় নেতাদের ব্যস্ততা ও ইসির অভ্যন্তরীণ কাজের চাপ মিলিয়ে কিছুটা দেরিতে এই কাজ শুরু হয়েছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, সবার সহযোগিতা নিয়ে কনসালটেশনের কাজ সুষ্ঠুভাবে শেষ করা যাবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার উল্লেখ করেন, ইসির ওয়েবসাইটে দীর্ঘ সময় ধরে রাখা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লিখিত মতামত ও সুপারিশের ভিত্তিতেই আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই আচরণবিধিটা একচুয়ালি ইলেকশনের সময় এটাই হচ্ছে যে মূল আইন যেটা কাজে লাগে, যেটা পরিপালনের উপরে একটা সুন্দর নির্বাচন নির্ভর করে।

তিনি আরও যোগ করেন, প্রার্থীরা ও রাজনৈতিক দলগুলো যদি আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করে, তবে আচরণবিধি নিয়ে কমিশনকে কঠোর আইন প্রয়োগের (জোরাজুরি) প্রয়োজন হয় না, যা নির্বাচনের পরিবেশকে সহজ করে।

নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে সিইসি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমরা কারও পক্ষে কাজ করতে পারব না, এটা পরিষ্কার। আমাদের বিবেক, দেশের প্রচলিত আইন, বিধি-বিধান যা বলে সেটা মেনেই আমরা চলব ইনশাআল্লাহ। যদি কেউ মনে করেন ইসি তাদের পক্ষে কাজ করছে না, তাই ইসি নিরপেক্ষ নয়—এই ধরনের ভাবনা ঠিক নয়। তাদের একমাত্র লক্ষ্য দেশের আইন ও বিধির প্রতি অনুগত থাকা।

বর্তমান কমিশনের সামনে থাকা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এআই ব্যবহার করে মিথ্যা ও অপতথ্য ছড়ানোকে চিহ্নিত করেন সিইসি। সোশ্যাল মিডিয়ার নিউজ এআই ইউজ করে যে অপতথ্য ছড়ানো, ভুল তথ্য ছড়ানো। এই চ্যালেঞ্জে আগের কমিশনদের মোকাবিলা করতে হয় নাই। এজন্য এই একটা নতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে বলেন তিনি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই ধরনের অনেক চ্যালেঞ্জ দেশের সীমানার বাইরে থেকেও তৈরি হচ্ছে। এই বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন।

আরপি/টিকে


Share this news on:

সর্বশেষ

img
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঢাকাজুড়ে আতশবাজি Jan 01, 2026
img
রাশিয়া থেকে যাত্রা করা জাহাজ আটক করল ফিনল্যান্ড Jan 01, 2026
img
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড গোপালগঞ্জ জেলায়! Jan 01, 2026
img
ছাত্রীনিবাস থেকে রাবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Jan 01, 2026
img
আরব আমিরাতে খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত Jan 01, 2026
img
তারেক রহমানের কাছে গভীর শোক প্রকাশ পাকিস্তানের স্পিকারের Jan 01, 2026
img
মালদ্বীপে খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত Dec 31, 2025
img
শাহজাহান চৌধুরীর হাতে নগদ ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, হলফনামায় ৭১ মামলা Dec 31, 2025
img
২ দেশের সম্পর্ক সমৃদ্ধ হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে, আশা নরেন্দ্র মোদীর Dec 31, 2025
img
নতুন বছরে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করবে : প্রধান উপদেষ্টা Dec 31, 2025
img
‘হ্যাপি ২০৩০’ লিখে ট্রলের শিকার বাদশা Dec 31, 2025
img
নতুন বছরে দেশ সুবিচারের পথে আরও এগিয়ে যাবে: গোলাম পরওয়ার Dec 31, 2025
img
নববর্ষের অঙ্গীকার হবে-অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনে জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন: তারেক রহমান Dec 31, 2025
img
চীনে খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত Dec 31, 2025
img
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়াল ৩৩ বিলিয়ন ডলার Dec 31, 2025
img
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আপসহীন যোদ্ধা ছিলেন মাহমুদুল হাসান: তারেক রহমান Dec 31, 2025
img
দুঃসংবাদ দিয়ে বছর শেষ হলো এমবাপ্পের! Dec 31, 2025
img
গোপনে মেয়ের বিয়ে দিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান Dec 31, 2025
img
১৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিল ফ্রান্স Dec 31, 2025
img
৫০তম ছবিতে সমাজসেবকের ভূমিকায় নতুন চ্যালেঞ্জে দেব Dec 31, 2025