কুড়িগ্রামের রৌমারী শুল্ক স্থলবন্দরে ভারত থেকে আমদানিকৃত পাথরবোঝাই ট্রাকপ্রতি পারিশ্রমিক ও নানা খরচের অজুহাতে ১ হাজার ৮০০ টাকা করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গেলে একদল অসাধু ব্যবসায়ী ও চাঁদা আদায়কারীরা সাংবাদিকদের বাধা দেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করতে হুমকি দেন।
গত ১৭ নভেম্বর সরেজমিনে রৌমারীর চর নতুনবন্দর শুল্ক স্থলবন্দরে গিয়ে জানা যায়, ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘ ৯ মাস পাথর আমদানি বন্ধ ছিল। পরে গত ২৩ অক্টোবর থেকে আবার আমদানি শুরু হয়।
তবে আমদানি শুরু হলেও স্বস্তিতে নেই ব্যবসায়ী মহল। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিটি পাথরবোঝাই ট্রাক থেকে বিভিন্ন খরচের নামে ১ হাজার ৮০০ টাকা করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ছবি তুলতে গেলে সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাধা দেয় এবং জানায়, কাস্টম কর্মকর্তার নির্দেশে ছবি তোলা নিষেধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, এলসি করার সময়ই ভ্যাট, ট্যাক্সসহ নির্ধারিত সব খরচ পরিশোধ করা হয়।
কিন্তু ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের পর পাথর খালাসের আগেই সিএনএফ কাগজ দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা হয়, যা ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির কারণ হচ্ছে।
রৌমারী সিএনএফ এজেন্সির পরিচালক মামুন মিয়া দাবি করেন, ট্রাকের ধরন অনুযায়ী ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়, যা সিএনএফ ফি ও স্থলবন্দরের বিভিন্ন খরচ বাবদ ব্যয় হয়।
আমদানি-রপ্তানি কারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলেপ উদ্দিনও ট্রাকপ্রতি ১ হাজার ৮০০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এতে নানা খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অতিরিক্ত অর্থ নয়; ভ্যাট, ট্যাক্স বাবদ ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ ৪–৫ শত টাকা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট সার্কেল রৌমারীর রাজস্ব কর্মকর্তা নাহিদ গাজী জানান, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন এবং অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে অবহিত নন। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। ছবি তোলা ও সংবাদ প্রকাশে বাধা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই; অসাধু ব্যবসায়ীরাই নিজেদের স্বার্থে এসব দাবি করতে পারে।
এবি/টিকে