মানবাধিকারকর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেছেন, সরকার কেন ভুলে যান, তারা একটি দেশের মালিক নয়, মালিক হচ্ছে জনগণ। জনগণকে হেফাজত করতে আমরা জনগণ তাদের নির্বাচনের মাধ্যমে বসিয়েছি। সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে নাটোর জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে আয়োজিত সমতল আদিবাসী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, একটি রাষ্ট্র জনগোষ্ঠী তৈরি করে না, জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রকে পরিচয় দেয় এবং রাষ্ট্র পরিচালনা করে। একসময় বাংলাদেশ ছিল না, পাকিস্তান ছিল। ভারত ছিল না, অন্য নামে ছিল। কিন্তু মানুষ ছিল, মানুষের পরিচয় ছিল। যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় যান, তারা ভুলে যান রাষ্ট্র জনগোষ্ঠীকে তৈরি করে না।
জনগোষ্ঠী রাষ্ট্র তৈরি করে। তারা অন্যায়ভাবে বলার চেষ্টা করেন, তুমি সে, তুমি ওই এটা বলার অধিকার কিন্তু রাষ্ট্রের নেই। যদি আপনাকে কেউ বলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, এটা অন্যায়ভাবে বলে এবং তাদের কোনো অধিকার নেই বলার? আপনারা যেভাবে যুগ যুগ ধরে পরিচয় দিয়ে এসেছেন জন্মগতভাবে সেই ভাবেই পরিচয় দেবেন।
ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে নিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, ক্ষুদ্র একটি আপেক্ষিক শব্দ। এটা কোনো মানুষের পরিচয় হতে পারে না। যারা সংবিধান রচিত করেন। যারা এসমস্ত ব্যবহার করেন, তারা তো অনেক উচ্চ ব্যক্তি। তারা কিভাবে সংবিধানে এ ত্রুটিগুলো লেখেন? আমরা ত্রুটি সংশোধনের দাবি জানাই। যত দিন সংশোধন না হয়।
সংবিধানে কোনো ব্যক্তি বা কোনো জনগোষ্ঠীর নামে বৈষম্য থাকা যাবে না। সেখানে যখন কোনো জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য প্রর্দশন করা হয়। যারা করেন সেটা অসাংবিধানিক কাজ করেন। তারা সংবিধানকে লঙ্ঘন করেন, অশ্রদ্ধা করেন। আমরা সচেতন নাগরিক হিসেবে এটা হতে দিতে পারি না। আমরা দাবি জানাব।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার থাকবে, অর্থনৈতিক অধিকার থাকবে, সামাজিক অধিকার থাকবে এবং সাংস্কৃতিক অধিকার থাকবে। এ দেশ হবে সাম্যের দেশ, ন্যায় বিচারের দেশ এবং মানবিক মর্যাদার দেশ। কোনো দেশে জনগোষ্ঠী যদি শঙ্কায় বাস করে, সেটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। কোনো মানুষ যদি মনে করে তার মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষিত হচ্ছে না, সেটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে। প্রত্যেক মানুষ একজন মানবাধিকার কর্মী। প্রত্যেক মানুষ তার অধিকার বুঝে পেতে বাধ্য।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নীলা হাফিয়া, আমরাই পারি (ইউক্যান) প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক প্রমুখ।
আইকে/টিএ