আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া, প্রথমার্ধেই কোণঠাসা হয়ে পড়া বার্সেলোনা বিরতির পরও পারল না ঘুরে দাঁড়াতে। বরং তাদের জালে এস্তেভোঁ চমৎকার এক গোল করার পর ব্যবধান বাড়ল আরও। ম্যাচ জুড়ে দারুণ খেলে তিন পয়েন্ট আদায় করে নিল চেলসি।
স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ৩-০ গোলে জিতেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলটি। জুল কুন্দের আত্মঘাতী গোলের পর ব্যবধান বাড়ান এস্তেভোঁ। তৃতীয় গোলটি করেন লিয়াম ডেলাপ। আরও তিনবার বার্সেলোনার জালে বল পাঠিয়েও স্বাগতিকরা গোল পায়নি অফসাইড কিংবা হ্যান্ডবলের কারণে।
ম্যাচে চেলসির দাপটের চিত্র ফুটে উঠছে পরিসংখ্যানেও। ৫৫ শতাংশ পজেশন রেখে গোলের জন্য ১৫টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখতে পারে এন্টসো মারেস্কার দল। বার্সেলোনার পাঁচ শটের কেবল দুটি লক্ষ্যে ছিল।
প্রাথমিক পর্বে পাঁচ ম্যাচে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে চেলসি। সমান ম্যাচে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পাওয়া বার্সেলোনা ৭ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে নেমে গেছে। চার ম্যাচে ১২ পয়েন্ট করে নিয়ে প্রথম তিনটি স্থানে আছে বায়ার্ন মিউনিখ, আর্সেনাল ও ইন্টার মিলান।
চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত চেলসি। কাছ থেকে বার্সেলোনার জালে বল পাঠান এন্সো ফের্নান্দেস। তবে তার আগে চেলসির ডিফেন্ডার ওয়েসলি ফোফানার হাতে বল লাগায় হ্যান্ডবল ধরেন রেফারি।
ষষ্ঠ মিনিটে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ফেররান তরেস। লামিনে ইয়ামালের পাস বক্সে পান তিনি, সামনে কেবল গোলরক্ষক, কিন্তু পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে অবিশ্বাস্যভাবে বাইরে মারেন ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
২২তম মিনিটে আবার বার্সেলোনার জালে বল পাঠান আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ফের্নান্দেস, তবে গোল মেলেনি এবারও, অফসাইডের কারণে। দুই মিনিট পর বক্সে ঢুকে উড়িয়ে মারেন পেদ্রো নেতো।
চাপ ধরে রেখে ২৭তম মিনিটে ভাগ্যের ছোঁয়ায় এগিয়ে যায় চেলসি। ডান দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে মার্ক কুকুরেইয়ার কাট-ব্যাকে নেতোর ফ্লিক গোললাইনে আটকে দেন ফেররান তরেস, তবে ডিফেন্ডার কুন্দের পায়ে লেগে জালে জড়ায়।
৪৪তম মিনিটে আরেকটি ধাক্কা খায় বার্সেলোনা। কুকুরেইয়াকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার রোনাল্দ আরাউহো।
দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে বার্সেলোনার জালে বল পাঠিয়ে আরেকবার অফসাইডের কারণে গোল পায়নি চেলসি। সেই হতাশা ভুলে পাঁচ মিনিট পর দুর্দান্ত গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এস্তেভোঁ।
রিস জেমসের পাস ডান দিকে পেয়ে ক্ষিপ্রতায় বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। এরিক গার্সিয়াকে কাটিয়ে, আলেহান্দ্রো বাল্দের বাধা এড়িয়ে জোরাল শটে কাছের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন তরুণ ব্রাজিয়ান ফরোয়ার্ড।
৬২তম মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনেন বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক। রবের্ত লেভানদোভস্কি ও ফের্মিন লোপেসকে তুলে রাফিনিয়া ও আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনকে নামান তিনি।
৭৩তম মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করে বার্সেলোনার ঘুরে দাঁড়ানোর আশা কার্যত শেষ করে দেয় চেলসি। বক্সে ফের্নান্দেসের পাসে গোলটি করেন ডেলাপ। লাইন্সম্যান শুরুতে অফসাইডের পতাকা তুললেও ভিএআরে পাল্টায় সিদ্ধান্ত।
৮১তম মিনিটে রাফিনিয়ার শট দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন চেলসি গোলরক্ষক রবের্ত সানচেস। বাকি সময়ে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি কেউ।
লা লিগায় আথলেতিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে চেলসির মাঠে খেলতে এসে ভরাডুবি হলো বার্সেলোনার। ঘরোয়া লিগে আগামী শনিবার আলাভেসের মুখোমুখি হবে তারা।
এমআর