জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৫ রান আর সেঞ্চুরির জন্য পাথুম নিসাঙ্কার চাই ৮। দুটি চার মারতে পারলে তিনি পৌঁছে যাবেন কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে। পেসার রিচার্ড এনগারাভাকে পুল করে ছক্কায় উড়িয়ে ম্যাচের ইতি টেনে মুখে হাসি নিয়ে, কোমরে হাত রেখে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন এই ওপেনার। হয়তো চার মারার জন্যই খেলেছিলেন শটটা!
নিসাঙ্কা শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি না পেলেও শ্রীলঙ্কা পেয়েছে বড় জয়। জিম্বাবুয়েকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনালে খেলার আশা জিইয়ে রেখেছে লঙ্কানরা।
রাওয়ালপিন্ডিতে মঙ্গলবার ২০ ওভারে জিম্বাবুয়ে করে ১৪৬ রান। শ্রীলঙ্কা লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ২২ বল হাতে রেখেই। ৪ ছক্কা ও ১১ চারে ৫৮ বলে ৯৮ রানে অপরাজিত রয়ে যান নিসাঙ্কা। ম্যাচ-সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই।
দুই হারের পর টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার প্রথম জয় এটি। ২ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে তিন নম্বরে। সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রানরেটে এগিয়ে থেকে দুইয়ে জিম্বাবুয়ে। আগেই ফাইনালে উঠে যাওয়া পাকিস্তানের পয়েন্ট ৬।
প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলে ফাইনালে খেলবে শ্রীলঙ্কা। তারা হেরে গেলে শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে পৌঁছে যাবে জিম্বাবুয়ে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দেখায় ১৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৯৫ রানে গুটিয়ে বড় ব্যবধানে হেরেছিল শ্রীলঙ্কা। সেবার শূন্য রানে ফেরা নিসাঙ্কা এবার শুরুতে একটু নড়বড়ে ছিলেন, প্রথম ৫ বলে তার রান ছিল ২। এরপর এনগারাভাকে পরপর দুটি বাউন্ডারিতে ডানা মেলে দেন তিনি।
পঞ্চম ওভারে টিনোটেন্ডা মাপোসাকে টানা চারটি চার মারেন নিসাঙ্কা। পরের ওভারে কামিল মিশারার বিদায়ে ভাঙে ৫৯ রানের শুরুর জুটি।
কুসাল মেন্ডিসকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যান নিসাঙ্কা। ফিফটি করেন তিনি ৩৮ বলে। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর এনগারাভাকে মারেন দুটি ছক্কা, ব্র্যাড ইভান্সের দুই বলে চার ও ছক্কা।
জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার দরকার যখন ১০, সেঞ্চুরির জন্য নিসাঙ্কার প্রয়োজন ১২। সপ্তদশ ওভারের শুরুতে একটি ওয়াইড দেন এনগারাভা। পরের বলে একটি চার মারেন নিসাঙ্কা, এরপরই ওই ছক্কায় তার সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা।
মেন্ডিসের (২৫ বলে ২৫*) সঙ্গে ৬৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৯ রানের জুটিতে নিসাঙ্কা একাই করেন ৬১। এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে টাডিওয়ানশে মারুমানিকে হারায় জিম্বাবুয়ে। ডিয়ন মেয়ার্স ও ব্রেন্ডান টেইলরও ভালো করতে পারেননি।
প্রথম চার জনের মধ্যে ১৫ পার করতে পারেন শুধু ওপেনার ব্রায়ান বেনেট (২৬ বলে ৩৪)। পরে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (২৯ বলে ৩৭) ও রায়ান বার্লের (২৬ বলে ৩৭*) দুটি ঝড়ো ইনিংসে দেড়শর কাছে যেতে পারে জিম্বাবুয়ে।
নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কার হয়ে ২টি করে উইকেট নেন দুই স্পিনার মাহিশ থিকশানা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৪৬/৫ (বেনেট ৩৪, মারুমানি ৪, মায়ার্স ৬, টেইলর ১৪, রাজা ৩৭, বার্ল ৩৭*, মুসেকিওয়া ৬*; থিকশানা ৪-০-২৩-২, শানাকা ৪-০-৩৬-১, চামিরা ৪-০-২৬-০, হাসারাঙ্গা ৪-০-২৩-২, মালিঙ্গা ৪-০-৩৩-০)
শ্রীলঙ্কা: ১৬.২ ওভারে ১৪৮/১ (নিসাঙ্কা ৯৮*, মিশারা ১২, কুসাল মেন্ডিস ২৫*; এনগারাভা ৩.২-০-৪৪-০, মাপোসা ২-০-২৯-০, ইভান্স ৪-০-৩৬-১, রাজা ৪-০১৭-০, মাসাকাদজা ৩-০-১৯-০)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: পাথুম নিসাঙ্কা
এমআর/টিএ