নতুন করে বাঁ পায়ের মেনিস্কাস (হাঁটুর সংযোগস্থলে) ইনজুরিতে পড়েছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার জুনিয়র। যে কারণে তাকে অনুশীলনের সময় ধারাবাহিক ব্যথা ও অস্বস্তিতে থাকতে হচ্ছে। এই সমস্যা কাটাতে নেইমারকে সার্জারি করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সান্তোসের মেডিক্যাল বিভাগ। এ ছাড়া এই মুহূর্তে তাকে মাঠে না নামার পরামর্শ দিয়েছিলেন ক্লাবটির চিকিৎসকরা। কিন্তু তা অমান্য করেই অনুশীলনে হাজির নেইমার।
ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো’ জানিয়েছে, চিকিৎসক, সান্তোস ক্লাব কর্তৃপক্ষ এবং ব্যক্তিগত স্টাফদের কাছ থেকে খেলা বন্ধ রাখার পরামর্শ পেয়েছেন নেইমার। একইসঙ্গে তারা মেনিস্কাস অঞ্চলের চোট দ্রুততম সময়ে সারাতে অ্যান্থ্রোস্কপি (হাঁটুর সংযোগস্থলে সার্জারি) করারও নির্দেশনা দেন। যা অনুসরণ করলে ২০২৫ সালে আর খেলা হবে না সাবেক এই বার্সেলোনা ও পিএসজি ফরোয়ার্ডের।
বর্তমানে ব্রাজিলিয়ান লিগ সেরি এ–তে রেলিগেশনের ঝুঁকিতে থাকা সান্তোসের আরও তিন ম্যাচ বাকি। নেইমারের সেসব ম্যাচে খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রবল। শুক্রবার স্পোর্ট রেসিফে’র বিপক্ষে ম্যাচ আছে ক্লাবটির, যেখানে খেলতে চান সান্তোসের এই ১০ নম্বর জার্সিধারী তারকা। সেই লক্ষ্যে নেইমার আজ (বৃহস্পতিবার) ক্লাবের সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনেও যোগ দেন বলে উল্লেখ করেছে গ্লোবো। যা এই সপ্তাহে প্রথমবার।
সান্তোসের জন্য শেষ ৩টি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ, এই বাধা টপকাতে না পারলে তারা অবনমন হয়ে দ্বিতীয় স্তরের লিগ সেরি বি–তে নেমে যাবে। ফলে চোট আরও বড় আকার ধারণ করার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও খেলতে চান নেইমার। এর আগে বুধবার নেইমারের পায়ে কিছু পরীক্ষা সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছিলেন সান্তোসের সভাপতি মারসেলো টেক্সেইরা। তারকা ফুটবলারের হাঁটুর অবস্থা জানতে এই পরীক্ষা নিয়মিতভাবে চালিয়ে যেতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে এরই মাঝে বাঁ পায়ের হাঁটুতে সুরক্ষা বন্ধনী পরে অনুশীলন করেন ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা।
যদিও গণমাধ্যমের প্রশ্ন এড়াতে নেইমার সতীর্থদের আগেই মাঠ ছেড়ে যান।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নেইমারের অ্যান্থ্রোস্কপি না করালে চোটের মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আর এই সার্জারি করালে চোট পুনর্বাসনে সময় লাগতে পারে এক মাসের মতো। যা নেইমারের জন্য ভালো খবর নয়। তাই হয়তো ঝুঁকি নিয়ে হলেও মাঠে থাকতে চান আন্তর্জাতিক ফুটবলে ব্রাজিলের এই সর্বোচ্চ গোলদাতা। কোচ কার্লো আনচেলত্তি সাফ জানিয়েছেন– নেইমারের ২০২৬ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকতে হলে পুরো ফিট থাকতে হবে। নতুন চোট তার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে প্রবেশের ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা হতে পারে।
সবমিলিয়ে ২০২৫ সালে চারবার ইনজুরিতে পড়েছেন নেইমার। এর আগে জানুয়ারিতে তিনি যোগ দেন সান্তোসে। মার্চে বাঁ পায়ের ঊরুতে চোটের কারণে তিনি ঘরোয়া লিগ পোলিস্তায় সেমিফাইনাল ম্যাচ মিস করেন। এপ্রিলে আবারও একই পায়ের মাংসপেশির চোটে অশ্রুসিক্ত চোখে মাঠ ছাড়েন নেইমার। সেপ্টেম্বরে গ্রেড-২ চোট, এবার ডান পায়ের ঊরুতে এবং সর্বশেষ নভেম্বরে বাঁ পাঁয়ের হাঁটুতে। ইনজুরিতে এভাবে যাওয়া-আসার কারণে পুরো বছরে ২৫টি ম্যাচ খেলতে পেরেছেন নেইমার, করেছেন ৭টি গোল। যা তার চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে!
আইকে/এসএন