এশিয়া ও ইউরোপের শেয়ারবাজারে উত্থান এবং ঝুঁকি নেয়ার প্রবণতা বাড়ায় বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম সামান্য কমেছে। আগামী সপ্তাহের মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠককে সামনে রেখে বিনিয়োগকারীরা এখন নতুন দিকনির্দেশনার অপেক্ষায়। খবর রয়টার্স
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মুদ্রাস্ফীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক পিসিই প্রকাশের আগে স্বর্ণবাজারে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। স্পট গোল্ড বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ০.২ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ১৯৯.৩০ ডলারে নেমেছে। ফেব্রুয়ারি সরবরাহের জন্য মার্কিন গোল্ড ফিউচারসও ০.১ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ২২৯.৫০ ডলারে রয়েছে।
অ্যাক্টিভট্রেডসের বিশ্লেষক রিকার্ডো ইভানজেলিস্টা বলেন, শুক্রবারের পিসিই তথ্যের আগে স্বর্ণবাজারে বুলিশদের তেমন তৎপরতা নেই। শেয়ারবাজারে ঝুঁকি নেয়ার প্রবণতা বাড়াও স্বর্ণের উত্থানকে সীমিত করেছে। এদিকে জাপানের শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার বড় ধরনের উত্থান দেখেছে, কারণ সরকারি বন্ড নিলামে ব্যাপক সাড়া মেলে।
মার্কিন অর্থনীতির সাম্প্রতিক তথ্যেও মিশ্র সংকেত দেখা যাচ্ছে। বুধবার প্রকাশিত এডিপি রিপোর্টে দেখা যায়, নভেম্বরে বেসরকারি খাতে চাকরি কমেছে ৩২ হাজার, যা আড়াই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন। তবে কম ছাঁটাইয়ের কারণে শ্রমবাজারকে অতটা দুর্বল মনে করছেন না বিশ্লেষকেরা।
বাজার এখন নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্রের সাপ্তাহিক বেকারভাতা দাবির সংখ্যা এবং শুক্রবারের ব্যক্তিগত ভোগ ব্যয় সূচকের দিকে, যা ফেডের পরবর্তী সিদ্ধান্তে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
সিএমই’র ফেডওয়াচ টুল দেখাচ্ছে, আগামী সপ্তাহে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ৮৯ শতাংশ। বড় ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানগুলোরও একই পূর্বাভাস ৯-১০ ডিসেম্বরের বৈঠকেই সুদ কমাতে পারে ফেড।
এদিকে রুপার বাজারে বড় পতন দেখা গেছে। ১.৯ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৫৭.৪ ডলারে নামলেও বুধবার এটি ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৫৮.৯৮ ডলার ছুঁয়েছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত রুপার দাম বেড়েছে ১০১ শতাংশ সরবরাহ ঘাটতি, মার্কিন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং বাজারে তারল্য নিয়ে উদ্বেগই এর প্রধান কারণ।
ওন্ডা’র বিশ্লেষক জায়ন ভাউদা বলেন, আই ও ডেটা সেন্টার খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের সম্ভাবনা রুপার চাহিদাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। এতে ২০২৬ সালের দিকে সরবরাহ-চাহিদা ঘাটতি আরও তীব্র হতে পারে।
এদিকে প্লাটিনাম ১.৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৪৫.৩০ ডলারে এবং প্যালাডিয়াম ১.১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪৪৩.৭৫ ডলারে।
দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ৯৫ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ১ হাজার ৪৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭২ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮৯ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।
কেএন/টিকে