প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে একটি সুদৃঢ়, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তি গ্রহণের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, আলোচনায় দীর্ঘসূত্রতা কেবল বৈশ্বিক পরিবেশ সংকটকে আরও তীব্র করবে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনের (UNEA-7) ৭ম অধিবেশনে 'হাই অ্যাম্বিশন কোয়ালিশন টু এন্ড প্লাস্টিক পলিউশন' শীর্ষক মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, 'প্লাস্টিক দূষণের বাস্তবতা বাংলাদেশ বহু দশক ধরে বহন করছে-জলাশয় ভরাট হওয়া থেকে শুরু করে মাটি ও খাদ্যশৃঙ্খল দূষণ পর্যন্ত। আমরা বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করেছি এবং সেই অভিজ্ঞতা আমাদের একটি সত্য শিখিয়েছে-নৈতিক অঙ্গীকার ও শক্তিশালী নীতিমালা থাকলে উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবে কাজ করে।'
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যোগ এখন বৈশ্বিক প্লাস্টিক দূষণবিরোধী প্রচেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। 'আমরা এমন একটি বৈশ্বিক প্লাস্টিক চুক্তির পক্ষে কাজ করছি, যা উৎপাদন, রাসায়নিক উপাদান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর পরিবেশগত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণকে পুরো জীবনচক্র জুড়ে মোকাবিলা করবে।'
বিচ্ছিন্ন জাতীয় উদ্যোগ যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'একটি কার্যকর ও বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সর্বোত্তম সুযোগ হলো এই প্লাস্টিক চুক্তি। আমাদের এমন একটি চুক্তি প্রয়োজন যা প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস করবে, ক্ষতিকর রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ করবে এবং কর্মীদের জন্য ন্যায়সঙ্গত রূপান্তর নিশ্চিত করবে।'
আলোচনায় অগ্রগতির ধীরগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আলোচনা দ্রুততর করতে হবে-বিলম্ব কমাতে হবে, খসড়া আরও স্পষ্ট করতে হবে এবং রাজনৈতিক অঙ্গীকার জোরদার করতে হবে। প্রতিটি পর্বে দীর্ঘসূত্রতা মানে আরও একটি বছর অনিয়ন্ত্রিত দূষণ। পৃথিবী তা সহ্য করতে পারবে না, বাংলাদেশও না।'
ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অবস্থান বহু বছরের অভিজ্ঞতা এবং মানুষ, নদী, প্রতিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার দায়িত্ববোধ থেকেই গড়ে উঠেছে।
পরিবেশ অধিফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জিয়াউল হক বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তার গতকাল `টক্সিক স্কিন ব্লিচিং: আ গ্রোয়িং গ্লোবাল হেল্থ থ্রেট' শীর্ষক আরেকটি অধিবেশনেও অংশগ্রহণ করেন।
আরপি/এসএন