ঋণ নয়, অনুদান হিসেবে জলবায়ু অর্থায়নসহ জলবায়ু ন্যায্যতা, পরিবেশ সুরক্ষা ও জনগণের অধিকার বিষয়ে ৮ দফা দাবি জানিয়ে শেষ হলো জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ-২০২৫। সমাবেশের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, শিল্পোন্নত দেশগুলোর ঐতিহাসিক নিঃসরণের দায় হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থায়ন করতে হবে। দ্রুত লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড কার্যকর এবং বাংলাদেশসহ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অভিযোজন খাতে অর্থায়ন বৃদ্ধি করতে হবে।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানে ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’র সদস্য সচিব শরীফ জামিল।
জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ-২০২৫ এর আহবায়ক ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপকূল, হাওর, চর ও বরেন্দ্র অঞ্চল থেকে আসা জেলে, কৃষক, আদিবাসী জনগোষ্ঠী, নারী, যুব, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীসহ প্রায় দুই হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। তারা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে জলবায়ু পরিবর্তন, শিল্পায়ন ও জীবাশ্ম জ্বালানির প্রভাব তুলে ধরেন।
সমাবেশে গৃহীত ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) অবিলম্বে বাতিল এবং সকল নতুন জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক প্রকল্প বন্ধের দাবি জানানো হয়। সরকারকে জাতীয় জ্বালানি পরিকল্পনা পুনর্গঠন করে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এতে ব্যাটারি সংরক্ষণসহ সৌর বিদ্যুৎ, স্মার্ট গ্রিড এবং পর্যাপ্ত জাতীয় বাজেট বরাদ্দের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়।
এ সময় জানানো হয়, সমাবেশে নদীভাঙন, লবণাক্ততার বিস্তার, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, বায়ু ও পানি দূষণ, বন উজাড় এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে আলোচিত হয়। আলোচনায় বক্তারা বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির সম্প্রসারণ ও অপরিকল্পিত শিল্পায়ন এসব সংকটকে আরো তীব্র করছে এবং মানুষের জীবিকা ধ্বংস করছে। এছাড়া সুন্দরবনসহ অন্যান্য ম্যানগ্রোভ বন সংরক্ষণ, দূষিত নদী পুনরুদ্ধার, শিল্প দূষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং জ্বালানি ও অবকাঠামো প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ভূমিদখল ও দুর্নীতির জন্য জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবিও উঠে আসে।
এবি/টিকে