মিয়ানমারের সামরিক জান্তা মঙ্গলবার জানিয়েছে, আটক প্রাক্তন নেতা অং সান সু চি ‘সুস্থ আছেন’। এর ঠিক একদিন আগে তাঁর ছেলে রয়টার্সকে বলেছিলেন, তিনি তাঁর ৮০ বছর বয়সী মায়ের অবস্থা সম্পর্কে সামান্যই তথ্য পাচ্ছেন এবং আশঙ্কা করছেন তিনি কিছু না জেনেই মারা যেতে পারেন।
টোকিওতে এক সাক্ষাৎকারে কিম আরিস বলেন, তিনি বছরের পর বছর ধরে তাঁর মায়ের কাছ থেকে কোনো খবর পাননি এবং মনে করেন তাকে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে আটকে রাখা হয়েছে।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সু চিকে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর আটক করা হয়, যে অভ্যুত্থানে তাঁর নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। তিনি উস্কানি, দুর্নীতি ও নির্বাচনী জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৭ বছরের কারাভোগ করছেন, যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সামরিক জান্তা পরিচালিত মিয়ানমার ডিজিটাল নিউজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অং সান সু চি সুস্থ আছেন। তবে, বিবৃতিতে তাঁর অবস্থা সম্পর্কে কোনো প্রমাণ বা বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
জান্তার এই বিবৃতির বিষয়ে কিম আরিসের তাৎক্ষণিক মন্তব্য জানা যায়নি। তিনি বলেন, মিয়ানমারে আসন্ন বহুপর্বের নির্বাচন, যা আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে, তা তাঁর মায়ের দুর্দশা লাঘবের একটি সুযোগ দিতে পারে। যদিও অনেক বিদেশি সরকার এই নির্বাচনকে সামরিক শাসনকে বৈধতা দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজিত একটি লোক দেখানো নির্বাচন হিসেবে খারিজ করেছে।
আরিস আশা প্রকাশ করেন, ভোটের আগে সমালোচকদের শান্ত করতে সামরিক বাহিনী হয়তো সু চিকে মুক্তি দিতে পারে বা তাঁকে গৃহবন্দী করতে পারে। সামরিক জান্তা আরিসের বিরুদ্ধে নির্বাচনকে ব্যাহত করার চেষ্টার অভিযোগ এনেছে। এটি ২০২০ সালের পর প্রথম সাধারণ নির্বাচন, যখন সামরিক বাহিনী সু চির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি নিছক মিথ্যা বানোয়াট, যা মিয়ানমারে আসন্ন অবাধ ও সুষ্ঠু বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সাধারণ নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য সময়মতো তৈরি ও বিতরণ করা হয়েছে।
সু চির রাজনৈতিক দল, মিয়ানমারের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি ভেঙে দেয়া হয়েছে এবং সামরিক জান্তাবিরোধী অন্যান্য বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচন বর্জন করছে।
আইকে/টিএ