চট্টগ্রামে ৯ হাজার কোটি টাকার কোকেন ধ্বংস

চট্টগ্রাম বন্দরে ২০১৫ সালে সূর্যমুখী তেল ঘোষণা দিয়ে বলিভিয়া থেকে আনা ৩৭০ লিটার কোকেন আনুষ্ঠানিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় র‌্যাব-৭ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত মাদক ধ্বংস ও মাদকবিরোধী প্রচারণা অনুষ্ঠানে ড্রামভর্তি কোকেন ধ্বংস করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল উপস্থিতিতে এই কোকেন মাটিচাপা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, দেশে এত বড় কোকেনের চালান কোনাদিন আসেনি। কোনোদিন চিন্তাও করিনি। আমরা যখন উদঘাটন করলাম, নানা ধরনের জটিলতা আসলো। তারপরও এটা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এবং কাস্টম সবাই মিলে চালানটি জব্দ করা হয়। চালানটি শনাক্ত করা হয়। এতে যে কোকেন মিশ্রিত রয়েছে সেটাও প্রমাণ হয়। হওয়ার পরে যথারীতি মামলা শুরু হয়।

মাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্সের নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মাদক ও মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূলে অভিযান অব্যাহত রেখেছে র‌্যাব। র‌্যাবের স্লোগান ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে। এ যাবৎ মাদকের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযানে ১০৬ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক মাশকুর রহমান বলেন, প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৩৭০ লিটার কোকেন মাটিচাপা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পরিবশে অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কোকেনগুলো ধ্বংস করা হয়।

২০১৫ সালের ৭ জুন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ২০১৫ সালের ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।

আদালতের নির্দেশে ওই চালানের কন্টেইনারটি খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রথমে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়। দুই পরীক্ষাগারেই নমুনায় তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।

বন্দরে আটক ১০৭টি ড্রামের মধ্যে ৫৯ ও ৯৬ নম্বর ড্রামে পরীক্ষায় তরল কোকেন পাওয়া যায়। দুটি ড্রামে ১৮৫ লিটার করে মোট ৩৭০ লিটার কোকেন ছিল।

র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, হাবিবুর রহমান এমপি, ফরিদুল হক খান এমপি, পীর ফজলুর রহমান এমপি, চট্টগ্রাম-১১ আসনের এমপি এম আবদুল লতিফ, র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. বেনজীর আহমেদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটোয়ারী, বিভিন্ন সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তাসহ র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কমর্কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পক্ষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান ও চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে সহকারী ব্যবস্থাপক (এস্টেট) রায়হান উদ্দিন মাদক ধ্বংস কার্যক্রম তদারকি করেন।

চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দ: ১০ আসামির বিচার শুরু

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: