জেনে নিন, যেভাবে সাবান তৈরি শুরু হয়

সাবান হচ্ছে ফ্যাটি এসিডের লবণ। এটি যে রংঙেরই হোক কাজ কিন্তু একটাই- পরিষ্কার করা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে সাবান ব্যবহারের ইতিহাস প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো।

খ্রিষ্টপূর্ব ২৮০০ বছর আগে প্রাচীন ব্যাবিলনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে সাবানজাতীয় বস্তুর ব্যবহারের প্রথম প্রমাণ মেলে। সে সময় মাটির পাত্রগুলোতে সাবানের মতো বস্তু তৈরি ও ব্যবহার করা হতো।

খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ সালে প্রকাশিত চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক লেখা দি ইবার্স প্যাপিরাস থেকে জানা যায়, সেই যুগে মিসরে পশুর চর্বি ও সবজির তেলের সঙ্গে অ্যালকাইন লবণ মিশিয়ে অনেকটা সাবানের মতো দ্রব্য প্রস্তুত করা হতো। তবে সেই সাবানজাতীয় পদার্থ শুধু পরিচ্ছন্নতার কাজে নয়, নানা ধরনের চর্মরোগের চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হতো।

সাবানের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় দ্বাদশ শতকের কোনো একসময়; যুক্তরাজ্যে। তবে আমরা যে সাবান ব্যবহার করি, তা এসেছে ১৮২৩ সালে; রসায়নবিদ মিশেল ইউজিন শেভ্রুলের হাত ধরে। এই ফরাসি বিজ্ঞানীই প্রথম চর্বি, গ্লিসারিন ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে সাবান তৈরির কৌশল আবিষ্কার করেন।

এরপর এল গুণগত মান পরিবর্তন। ১৮৬১ সালে বেলজিয়ান রসায়নবিদ আর্নেস্ট সলভে এ কাজে ভূমিকা রাখেন। তিনি শেভ্রুলের কৌশলকে ভিত্তি ধরেই সাবান তৈরিতে সোডা অ্যাশ ব্যবহার করে গুণগত মান বাড়ান। সাবানের বাণিজ্যিক ব্যবহার বাড়াতে তা ছিল বড় অগ্রগতি।

সাবান তৈরির কৌশল ভারতবর্ষে নিয়ে আসেন আরব মুসলমানেরা। এই কৌশলে ঢাকার কারিগরেরা ছিল সেরা। সেজন্য সারা ভারতে ঢাকাই সাবানের সুনাম ছিল। এই ঢাকাই সাবান এতোই বিখ্যাত ছিল যে সুদুর বসরা আর জেদ্দা বন্দরে জাহাজ বোঝাই হয়ে ঢাকাই সাবান যেত অভিজাতদের ব্যবহারের জন্য। তখন ঢাকায় একটা বিখ্যাত সাবান ফ্যাক্টরি ছিল তার নাম- ‘বুলবুল সোপ ফ্যাক্টরি’।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ