আওয়ামী লীগের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্যাতন হচ্ছে: জিএম কাদের

দেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্যাতন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর নগরীর স্কাইভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি সব সময় নির্যাতিতদের পক্ষে থাকে। আমরা নির্যাতিতদের পক্ষে কথা বলায় তারা আমাদের সমর্থন করতে পারে। আওয়ামী লীগের সদস্যরাও তো মানুষ। তারা দলের সদস্য হতে পারে, কিন্তু তারাও তো দেশের ভোটার। জামায়াত-বিএনপি উভয় প্রকাশ্যে তাদের ভোট নিতে বক্তব্য দিচ্ছে। অথচ জাতীয় পার্টি এ নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি। এরপরেও তারা ধারণা করছে, আওয়ামী লীগের বড় ভোট ব্যাংক লাঙলের পক্ষে যেতে পারে। তাদের ভোট পাওয়া কি জাতীয় পার্টির অপরাধ হবে? তারাও তো দেশের নাগরিক, তাদের তো দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়নি।

বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন বিষয়ে জিএম কাদের বলেছেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা উভয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। একবার মনোনয়নপত্র জমা হলে জোট করার সুযোগ থাকে না। তবু আমরা সমঝোতা করতে পারি। যদিও বিএনপির সঙ্গে আমাদের কোনো কথা হয়নি।

জিএম কাদের বলেন, যেখানে আমাদের দুর্বল প্রার্থী আছে সেখানে বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া, আবার যেখানে জাতীয় পার্টির ভালো প্রার্থী রয়েছে সেখানে বিএনপি সমর্থন দিলে যদি প্রার্থীরা জিতে যায় তবে এমন আলোচনা হতে পারে। যদি ওনারা চান এবং জাতীয় পার্টি যদি সেটা সুবিধাজনক মনে করে তবে।

নির্বাচনের পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ভালো নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আমাদের তিনজন সংসদ সদস্য প্রার্থী জেলে রয়েছেন। তারা জামিনে মুক্ত হলে আবারও শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জুলাই অভ্যুত্থানে নিজেদের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। যারা এ আন্দোলনকে দলীয়ভাবে রেজুলেশন করে সমর্থন দিয়েছে। সেখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের হত্যা মামলায় জেলে ঢোকানো হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, তাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে জামিন দেওয়া হবে না। এটি যদি হয়, তাহলে ন্যায়বিচার পরিপন্থি হবে ও স্বাধীন বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপ করা হবে। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের প্রশাসন ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জুলাইয়ের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে।

এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা সময় দিচ্ছে না। অথচ অন্য দলের সঙ্গে দিনে দুবার করে কথা বলছে নির্বাচন কমিশন।

তিনি বলেন, এবার নির্বাচনে জটিল মনোনয়নপত্র তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ নতুন প্রার্থীরা এটি পূরণে ভুল করতে পারে এবং পরে তারা নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। আমাদের সংশয় রয়েছে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে বেআইনিভাবে বাদ দেওয়াকে আইনসঙ্গত করার জন্য কমিশন কিংবা সংশ্লিষ্টরা এ পন্থা অবলম্বন করতে পারে। আমরা নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখছি না। সব সময় হ্যারেসমেন্টের শিকার হচ্ছি। তবে এ নির্বাচনকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টি আমরা প্রতি মুহূর্তে জনগণকে জানাবো। জনগণ আমাদের বড় শক্তি, তারা আমাদের সমস্যা সমাধান করতে পারবে।

এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ইয়াসির, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, জেলা জাপার আহ্বায়ক আজমল হোসেন লেবুসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
একদিনে প্রায় ৩ হাজার স্বাক্ষর সংগ্রহ তাসনিম জারার, প্রয়োজন ১৫০০ Dec 29, 2025
img
কামিন্স ও হ্যাজলউডকে দলে নিয়ে স্কোয়াড সাজাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া Dec 29, 2025
img
বুদ্ধিমান দর্শক তৈরি না হলে, ভালো কাজও নীরবে হারিয়ে যায়: সত্যজিৎ রায় Dec 29, 2025
img
ফরিদপুর-৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা বিএনপি প্রার্থী নায়াব ইউসুফের Dec 29, 2025
img
বডি ক্যামেরা কেনার দায়িত্ব পেলেন ৬৪ জেলার এসপি Dec 29, 2025
img
কষ্টই মানুষকে শক্ত করে, আর শক্ত মানুষই সাফল্য পায়: অক্ষয় কুমার Dec 29, 2025
img
নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি করা খুব দরকার: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় Dec 29, 2025
img
বিপিএল লুকে তানজিন তিশা, নেটমাধ্যমে ঝড়ের মতো ট্রল Dec 29, 2025
img
রাজবাড়ীর ২ টি আসন থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ১৫ জন Dec 29, 2025
img
ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে বন্ধ রেল যোগাযোগ Dec 29, 2025
img
তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিনিয়োগকারীদের একটা কনফিডেন্স বুস্টার: বিডা চেয়ারম্যান Dec 29, 2025
img
শীতে কাঁপছে নওগাঁ, তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রিতে Dec 29, 2025
img
নতুন গবেষণা প্রকাশ, ভিটামিন সি গ্রহণের বড় সুফল Dec 29, 2025
img
সারাদেশে ১৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল শুরু Dec 29, 2025
img
৩০ ডিসেম্বর গুরুত্বপূর্ণ অভিভাষণ দিবেন প্রধান বিচারপতি Dec 29, 2025
img
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়নে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ প্রকাশ Dec 29, 2025
img
দুই ম্যাচ পর জয়ের স্বাদ পেল টটেনহ্যাম Dec 29, 2025
img
তাইওয়ানকে ঘিরে বড় সামরিক মহড়ার ঘোষণা চীনের Dec 29, 2025
img
শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন পেলেন বিএনপির আরেক নেতা Dec 29, 2025
img
পাকিস্তানি উপস্থাপিকার প্রশ্নে বিস্মিত পলাশ Dec 29, 2025