ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য

সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অপরিহার্য। আর অপর্যাপ্ত ঘুম বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, অপর্যাপ্ত ঘুম আপনার দেহের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ ও বিপাকীয়করণের ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করতে পারে? সাধারণত যারা রাতে ঠিকমতো ঘুমায় না তাদের বেশিরভাগের রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।

রক্তে যখন শর্করার মাত্রা খুব বেশি থাকে তখন কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে তা বের করে দেয়ার চেষ্টা করে, এ কারণে ঘনঘন প্রস্রাব হয়। সুতরাং, রাতের বেলায় যদি আপনি বাথরুমে যাওয়ার জন্য বারবার ঘুম থেকে ওঠেন, তবে এটি রক্তে শর্করার উচ্চমাত্রার লক্ষণ হতে পারে।

গবেষণা কী বলছে?
একটি সমীক্ষার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্কদের ছয়দিনের জন্য রাতে কেবল চার ঘণ্টা ঘুমাতে বলা হয়েছিল। ছয়দিন পর অংশগ্রহণকারীদের গ্লুকোজ সহনশীলতার মাত্রা (গ্লুকোজ ভেঙে ফেলার ক্ষমতা) পরিমাপ করা হয়েছিল। দেখা গেছে, তাদের গ্লুকোজ সহনশীলতার মাত্রা আগের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমে গিয়ে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সৃষ্টি হয় এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে।

যখন কম ঘুমানো লোকদের উচ্চতর শর্করাযুক্ত প্রাতরাশ খাওয়ানো হতো, তখনও তাদের গ্লুকোজের মাত্রা ভালোভাবে বিশ্রাম নেয়া লোকদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।

কেন এমন হয়?
যখন কোনো ব্যক্তি গভীর ঘুমে প্রবেশ করেন, তখন তার স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়াকলাপ হ্রাস পায়। মস্তিষ্ক কম গ্লুকোজ ব্যবহার করে, স্বাস্থ্যকর হরমোন বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষতিকর হরমোন করটিসোলের হ্রাস ঘটে। এ কারণে দেহের গ্লুকোজ স্তর নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পরিমাণ গভীর ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ।

অন্য একটি পরীক্ষায়, গবেষকরা মানুষের ঘুমের পর্যায়ে পরিবর্তন করেছিলেন। বিজ্ঞানীরা অংশগ্রহণকারীদের গভীর ঘুমে নিমজ্জিত হওয়া রোধ করেছিলেন, আবার তারা যাতে না জেগে ওঠে সেটাও নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। এতে দেখা গেছে, ওই লোকগুলির ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং গ্লুকোজ স্তর ২৫ শতাংশ কমেছে।

যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ঘুমের বিষয়ে খুব যত্নশীল হওয়া উচিত। কারণ তাদের রুটিনে সামান্য পরিবর্তনও তাদের শক্তির স্তর কমাতে এবং তাদের ক্লান্ত করতে পারে। আপনি যত বেশি ক্লান্তি বোধ করবেন, আপনার দেহের মোটর তত বেশি কাজ করবে এবং আপনার ইনসুলিনের ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা তত বাড়বে। সুতরাং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের জন্য খাদ্যাভ্যাসের মতো যথাযথ ঘুমও জরুরি।

কার কতটা ঘুম দরকার তা ব্যক্তি বিশেষে আলাদা হয়। তবে সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের প্রতিদিন সাত থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো উচিৎ। একজনের ঘুমের প্রয়োজন জিনগতভাবে নির্ধারিত হয় এবং পরিবর্তিত হয়। গড়ে প্রতি রাতে আমাদের সাড়ে সাত ঘণ্টা ঘুম দরকার। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ