বিশ্ব এখন ভয়ংকর এক অদৃশ্য শত্রুর মুখোমুখি। অদেখা এই শত্রু কোথায় ওৎ পেতে আছে তা জানে না কেউ। যার কারণে জীবন বাঁচাতে ঘরবন্দি বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ। এই কোভিড-১৯ এর জীবাণু মানবদেহের বাইরে কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে এটা এখনও পরিষ্কার নয়।
গবেষণা বলছে, ভাইরাসটি দরজার হাতল, প্লাস্টিক ও লেমিনেটেড ওয়ার্কটপ ও কঠিন বস্তুর ওপর দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে। সেই জায়গাটি কারো সংস্পর্শে আসলে তার এই সংক্রমণ হতে পারে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে- ভিড়, জনাকীর্ণ স্থান বা বদ্ধ ঘরে বাতাসেও বেশিক্ষণ বেঁচে থাকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। আন্তর্জাতিক ‘নেচার রিসার্চ’ পত্রিকায় এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে- সম্প্রতি উহানের দুটি হাসপাতালে দেখা গেছে, শৌচাগারে এবং যে ঘরে স্বাস্থ্যকর্মীরা মাস্ক পরেন ও অন্যান্য আত্মরক্ষার ব্যবস্থা নেন, সেখানকার বাতাসে কোভিড-১৯ এর ‘জেনেটিক মেটিরিয়াল’ স্থায়ী হয়েছে দীর্ঘক্ষণ। তা থেকে গবেষকদের সিদ্ধান্ত, যেখানে অনেক লোক জড়ো হন সেখানে করোনাভাইরাস বাতাসে দীর্ঘক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। যে ঘরে বায়ু চলাচলের রাস্তা কম, সেখানেও এ ভাইরাসের বেঁচে থাকতে সুবিধা হয়।
গবেষকরা জানান, মানুষ যখন শ্বাস নেয়, কাশে বা কথা বলে, তখন দু’ধরনের ড্রপলেট ছড়ায়। যেগুলোর আয়তন বড় সেগুলো পড়ে মাটিতে। তারপর উবে যায়। কিন্তু ছোট ড্রপলেটগুলো বাতাসে থেকে যায় কয়েক ঘণ্টা।
উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কে লানের নেতৃত্বে গবেষকরা লক্ষ্য করেন, হাসপাতালের পেশেন্ট ওয়ার্ড, সুপার মার্কেট অথবা বসতবাড়িতে বাতাসে তেমন বেশি সংখ্যক ড্রপলেট নেই।
কিন্তু হাসপাতালের শৌচাগারে ও অপর দুটি জায়গায়, যেখানে অনেকে জড়ো হন এবং বায়ু চলাচলের বেশি ব্যবস্থা নেই, সেখানেই ড্রপলেট বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়েছে বাতাসে।
গবেষকরা জানান, এই পর্যবেক্ষণ থেকে বোঝা যায়, করোনাকে রুখতে গেলে কোথাও ভিড় হতে দেয়া চলবে না। সব জায়গায় বায়ু চলাচলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে।
টাইমস/জিএস