করোনাক্রান্ত ডা. ফারিয়ার যে কথা পর্দার আড়ালে

দীর্ঘদিন আমি ঘরে থেকেও ঘর থেকে বিচ্ছিন্ন। মেয়ে কেঁদে কেঁটে অস্থির। ৫ মিনিট গল্প করিনা। আমার একটি ছোট পরিবার আছে, যেখানে আমার ৮ বছরের মেয়ে ফারিসা আর স্বামী Lt.Colonel ফয়সাল হাসান। আমি যখন কাজ করছিলাম, আমাকে একটু পরপর গরম পানি খাওয়ানো থেকে শুরু করে সারাক্ষণ সাহায্য করে গেছেন। আমার কান্নার সময় পাশে থেকেছে। রোগীরা কাঁদলে, কাছের মানুষরা কাঁদলে আমাদের কান্না থামাতে পারিনি। কেউ ভাল না থাকলে আমিও ভালো থাকিনা। সবাই ভালো থাকার নামই আমার কাছে সুখ।

আমি কান্না শুনেছি আমাদের ডাক্তারদের, ইমারজেন্সি রোগীদের কান্নায় তারা ভেঙে পড়েছে। আমি কান্না শুনেছি রোগীদের, অজস্র কান্না শুনে শক্ত হয়েছি, শুধু বলেছি, হে আমার আল্লাহ আমাদের কাজের পরিধি আরও বড় কর। যেন সারা বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। বিনা চিকিৎসায় যেন মারা না যায়। আল্লাহ আমাদের কথা শুনেছেন। আল্লাহ চাইলে সব হয়।

আমি এবং আমার ফিমেল ডেন্টাল সার্জনস অফ বাংলাদেশ গ্রুপের অসংখ্য সদস্য, আমাদের সাথে থাকা বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা কত রাত ঘুমাইনা মনে নেই। আমরা সকালে ঘুমাই। অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি একের পর এক। তবু কাজ থামাইনি। ইচ্ছে করে চিকিৎসা দেইনি এমন কেউ নেই জানা মতে। আমাদের ডা. শাম্মা, ডা.পুন্ন, ডা.মিসি, ডা. শুভেচ্ছা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

আমাদের প্রচার হচ্ছে, কাজের পরিধি বেড়েছে, প্রেশার বাড়ছে অনেক। তবুও ভাল করোনা ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে রাতটাকে সুন্দর কাজে লাগাচ্ছি। এভাবে কয়দিন চালাতে পারবো জানিনা। কিন্তু এভাবে ৮৫%করোনা রোগী সুস্থ করা সম্ভব। লকডাউন উঠে গেলে এভাবেই চিকিৎসা নিতে হতে পারে।

এখনই সময় বড় পরিসরে সবাই আমাদের পাশে এগিয়ে আসলে করোনা জয় সম্ভব। করোনা হয়তো একদিন সবার হবে। তাই ভয় না পেয়ে, চিকিৎসা নিন। চিকিৎসা নিলে করোনা ভাল হয়ে যায়।

লেখক: ডেন্টাল সার্জন
এম এস রেসিডেন্ট
ডিপার্টমেন্ট অর্থডন্টিক্স
বিএসএমইউ

Share this news on: