হাই ব্লাড প্রেসারে ভয়াবহ হতে পারে কোভিড সংক্রমণ

দীর্ঘদিন ধরে রক্তচাপজনিত অসুখ বা হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যায় ভুগছেন, এসব ব্যক্তির ক্ষেত্রে লিঙ্গ, বয়স নির্বিশেষে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি কেন বেশি, এই নিয়ে ক্লিনিক্যাল মেডিসিন জার্নালের রিসার্চ বলছে, উচ্চ রক্তচাপ মানেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাই ভাইরাস যুদ্ধে জয়ের সম্ভাবনাও কম।

চীনে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ২০ থেকে ২২ শতাংশ উচ্চ-রক্তচাপের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন। ইতালির ক্ষেত্রে তা ৭৬ শতাংশ। অর্থাৎ সংক্রমণের সম্ভাবনা মারাত্মক রকমভাবে বেশি। এর মধ্যে ৬০ পেরিয়ে গিয়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বিশ্ব জুড়ে দুই তৃতীয়াংশই উচ্চ-রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন।

যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মাস্ক না পরা মৃত্যুকে ডেকে আনার শামিল, বলছেন চিকিৎসকরা। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের বক্তব্য, আনুষঙ্গিক রোগ হাই ব্লাড প্রেসার। তাই জীবাণু প্রবেশ করলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও ক্ষীণ।

সে ক্ষেত্রে শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া অর্থাৎ স্যানিটাইজার এবং বার বার হাত ধোওয়ার নিয়ম মেনে চলতে হবে। সংক্রমণ তো বটেই, শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে নিয়ম না মেনে চললে। ভাইরাস একবার বংশবৃদ্ধি করলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলিকে নষ্ট করে দিতে পারে সহজেই। অতএব, মাস্ক না পরে বের হলে সংক্রমণের সঙ্গে ফ্যাটালিটি অর্থাৎ মৃত্যুর আশঙ্কাও রয়েছে, এমনই জানান ডা. অরিন্দম।

এই প্রসঙ্গে মেডিসিনের চিকিৎসক অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ওষুধের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম চলবে না। ডায়াবেটিসের সমস্যাও শুরু হতে পারে। সেক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রয়েছে কি না, নিয়মিত তা মনিটর করে নেয়া ভালো।

অভিজিৎবাবু বলেন, লিঙ্গ নির্বিশেষে বয়সও একটা বড় ফ্যাক্টর উচ্চ-রক্তচাপের ক্ষেত্রে। তিরিশের কোঠায় বা চল্লিশের কোঠায় যাদের বয়স, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে তাদেরও করোনা আবহে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, বার বার হাত ধোয়ার সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। ভিড় এড়াতেই হবে। ভিড়ে মাস্কবিহীন ভাবে উচ্চ রক্তচাপের কোনো রোগীর যাওয়ার অর্থ- মৃত্যুকে ডেকে আনা। দিনে দু’বার রক্তচাপ মনিটর করার পরামর্শও দিয়েছেন অভিজিৎবাবু।

কারণ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা মানে কিডনির স্বাভাবিক ক্রিয়ায় প্রভাব পড়বেই। নজর রাখতে হবে সেদিকেও। এছাড়াও সেরিব্রাল ইনফার্কশন বা স্ট্রোক হতে পারে যে কোনো সময়। অ্যাকিউট ইনফার্কশনও হতে পারে।

দ্য আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি অ্যান্ড অ্যামেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জানাচ্ছে, একে করোনা আবহ। তার মধ্যে রক্তচাপের সমস্যায় সময় মতো ওষুধ না খেলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা আগের থেকে অনেকটাই বেশি। কারণ মানসিক উদ্বেগও এই সময়ে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।

সেক্ষেত্রে মাস্ক না পরে সংক্রমণ হলে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে মৃত্যুও হতে পারে। তাই বার বার নিয়ম মেনে চলতে বলছেন চিকিৎসকরা। বলছেন, সতর্ক থাকতে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: