করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ দিয়ে প্রতারণার মামলায় প্রধান আসামি ও রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাহেদকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেয়া হয়। সাহেদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে ডিবি। শুনানি শেষে বেলা ১১টার দিকে সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এছাড়া একই মামলায় গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে ১০ দিন ও কর্মী তরিকুল ইসলামের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গত ৬ ও ৭ জুলাই পরীক্ষা ছাড়াই করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ প্রদানসহ নানা অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে করোনা পরীক্ষার হাজার হাজার ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে রোগীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এসময় হাসপাতালের দুই শাখাকেই সিলগালা করে দেয় র্যাব। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ৮ কর্মীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার অভিযোগে হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এদিকে অভিযানের বিষয়টি পেয়েই আত্মগোপনে চলে যান প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সাহেদ। র্যাব, পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারির মধ্যেও ৮ দিন পলাতক ছিলেন তিনি। অবশেষে বুধবার ভোরে সাতক্ষীরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে র্যাবের হাতে ধরা পড়ে সাহেদ।
সাহেদকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বুধবার ভোর ৫টার দিকে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্তবর্তী কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদী পার হওয়ার জন্য বোরকা পরে মাছ ধরা নৌকায় উঠেছিলেন সাহেদ। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। উদ্ধার করা হয় তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি অবৈধ অস্ত্র। এ সময় নদীতে সাঁতরে পালিয়ে যান ট্রলার চালক।
পরে সকাল ৯টায় সাতক্ষীরা থেকে হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। প্রথমে নেয়া হয় র্যাব সদর দপ্তরে। সাহেদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে বেলা ১১টার দিকে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর সড়কের ৬২ নম্বর বাসার পঞ্চম তলায় ‘গোপন অফিসে’ অভিযান চালায় র্যাব। এখান থেকে জব্দ করা হয় ১ লাখ ৪৬ হাজার জাল টাকা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে কিছুক্ষণের জন্য সদর দপ্তর থেকে তাকে নেয়া হয় উত্তরার র্যাব-১ এর অফিসে। সেখান থেকে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তরের জন্য তাকে ডিবি কার্যালয়ের উদ্দেশে নেয়া হয়। বিকাল সোয়া ৫টায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সাহেদকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
প্রতারণা মামলায় এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক সাহেদ, রিজেন্ট গ্রুপের এমডি মাসুদ পারভেজসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
পালানোর সময় কুকুরের কাছে যেভাবে ধরা পড়েন সাহেদ!
সাহেদ জাতীয় প্রতারক, বলেই চড়-থাপ্পড় (ভিডিও)
পিস্তলসহ প্রতারক সাহেদ গ্রেফতার
গাড়িচাপা দিয়ে ‘সাহেদ’র হাসপাতালে নিলেই চালক পেত আট হাজার টাকা!
টাইমস/এইচইউ