করোনায় ৩০ জনের দাফন-কাফন করে নিজেই আক্রান্ত যুবলীগ নেতা ইয়াছিন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্ব প্রায় স্থবির। এই পরিস্থিতিতে একজনের সঙ্গে আরেকজনের সরাসরি যোগাযোগও প্রায় বন্ধ। ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বা মারা গেলে নিজের স্বজনরাও কাছে আসছে না, দাফন-কাফনে অংশ নিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সমাজের কিছু মহৎ হৃদয়ের অধিকারী মানুষজন তাদের দাফন-কাফনে এগিয়ে আসছেন।

তাদেরই একজন ইয়াছিন শরিফ মজুমদার (৩৫)। তার বাড়ি ফেনীর পরশুরাম উপজেলায়। তিনি পরশুরাম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বিআরডিবির অধীন পরশুরাম কেন্দ্রীয় কৃষক সমবায় সমিতির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

দেশে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে করোনায় কোনো ব্যক্তি মারা গেলে দাফন-কাফনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন ইয়াছিন শরিফ। এজন্য তিনি উপজেলায় ১১ সদস্যের একটি দাফন-কাফন টিম গঠন করেন। তারপর থেকে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় করোনা ও করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন দেয়া শুরু করে তার দল। ইতোমধ্যে তিনি ও তার দল প্রায় ৩০ জনকে দাফন করেছেন।

এবার তিনি নিজেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার ফেসবুকে নিজেই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানান ইয়াছিন।

তিনি জানান, সম্প্রতি জ্বর, সর্দি ও কাশি দেখা দেয় তার। পরে ২২ জুলাই তার নমুনা সংগ্রহ করে নোয়াখালীর আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো হয়। রোববার দুপুরে তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বর্তমানে তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে নিজ বাসায় আইসোলেশনে আছেন।

এছাড়া করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়াদের দাফন-কাফন ছাড়াও ইয়াছিন শরিফ নিজ উদ্যোগে চলতি মাসের মাঝামাঝি ‘হ্যালো অক্সিজেন’ নানে একটি সেবা কার্যক্রম শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি অক্সিজেন সিলিন্ডার পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় করোনা রোগীদের বাড়ি পাঠিয়ে থাকেন।

ইয়াছিন শরিফের করোনায় আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল খালেক মামুন।

তিনি জানান, উপজেলায় ইয়াছিন শরিফসহ এ পর্যন্ত ৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন মারা গেছেন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন সাত-আটজন। এছাড়া এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪৪ জন।

ইয়াছিন শরিফের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তার চাচা ও পরশুরাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: