রহিমার ভালোবাসার টানে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার এখন যশোরের কৃষক!

আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস হোগল ও বাঙালি নারী রহিমা খাতুনের বিরল ভালোবাসার গল্প শুনবো আজ। প্রেমের টানে একযুগ ধরে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশি নারীর সঙ্গে ঘর সংসার করছেন। ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন কৃষিকাজ। নিজেই জমিতে ধান কাটেন, বোঝা টেনে নিয়ে ধান তোলেন ভ্যানে। যশোরের কেশবপুরের মেহেরপুর গ্রামে সংসার করছেন রহিমা ও ক্রিস হোগল দম্পতি।

জানা গেছে, ক্রিস হোগলের বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে, পেশায় তিনি পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। রহিমা খাতুনের সঙ্গে যখন দেখা হয় তখন তিনি ভারতের মুম্বাই শহরে থাকতেন। সেখানে তিনি অনিল আম্বানির রিলায়েন্স ন্যাচারাল রিসোর্সেস লিমিটেড কোম্পানিতে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন। মুম্বাই শহরেই ঘটনাক্রমে রহিমার সঙ্গে তার দেখা হয়।

রহিমা খাতুন বলেন, শৈশবে তার বাবা আবুল খাঁ ও মা নেছারুন নেছার হাত ধরে অভাবের তাড়নায় পাড়ি জমান ভারতে। পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতে তার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। বাবা শ্রম বিক্রি করতেন। আর রহিমা সেই শৈশবে বারাসাতের বস্তিতে একা থাকতেন। তের চৌদ্দ বছর বয়সে বাবা তাকে বিয়ে দেন। জমিও ক্রয় করেন সেখানে। রহিমা খাতুন তখন তিন সন্তানের জননী। কিন্তু অভাবের তাড়নায় তার প্রাক্তন স্বামী সেখানকার জমি বিক্রি করে দেন। রহিমা খাতুনকে একা ফেলে তার স্বামী নিরুদ্দেশ হয়ে যান। রহিমা খাতুন চলে যান জীবিকার সন্ধানে মুম্বাই শহরে। রহিমা খাতুন আশ্রয় নেন পূর্ব পরিচিত এক ব্যক্তির বস্তির খুপরিতে। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের রাস্তায় পরিচয় হয় ক্রিস হোগলের সঙ্গে। ক্রিস হোগল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন তার পানে।

হিন্দিতে দুয়েক লাইন কথা বলার পর তারা আবার দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবে ছয় মাস পর তারা বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন। বিয়ের তিন বছর পর কর্মসূত্রে ক্রিস হোগল স্ত্রী রহিমাকে নিয়ে চীনে যান। সেখানে পাঁচ বছর ছিলেন। এরপর তারা কেশবপুরের মেহেরপুরে রহিমা খাতুনের বাবার ভিটায় ফিরে আসেন। মেহেরপুরে ফিরে আসার পর রহিমা খাতুনের বাবা আবুল খাঁ মারা যান। বাড়ির উঠানের পাশে তাকে কবর দেওয়া হয়। মোজাইক পাথর দিয়ে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ করে বাবার কবর সংরক্ষণ করেন তারা। রহিমার মা নেছারুন নেছা এখনও জীবিত। রহিমার প্রথম স্বামীর তিনটি সন্তান তাদের সঙ্গে থাকে। এভাবেই চলছে ক্রিস হোগল ও রহিমার সুখের সংসার।

 

টাইমস/জেকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রাবিতে একই মঞ্চে ডাকসু, চাকসু ও রাকসুর নির্বাচিত ভিপিরা Nov 15, 2025
img

সাদিক কায়েম

কেউ নব্য ফ্যাসিস্ট হতে চাইলে আমাদের আবারও রাস্তায় নামতে হবে Nov 15, 2025
img
হরমুজ প্রণালী থেকে তেলবাহী ট্যাংকার আটক করল ইরান Nov 15, 2025
img
জামায়াত আমাদের পুরনো বন্ধু, ভাইয়ে ভাইয়ে আর লড়াই না করি : জয়নুল আবদিন ফারুক Nov 15, 2025
img

মোস্তফা ফিরোজ

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে ইউনূসের ওপর ব্রিটেন-ভারতের চাপ বাড়ছে Nov 15, 2025
img
আসছে বি ইউ শুভর নতুন নাটক 'শুধু তোমারই অপেক্ষায়' Nov 15, 2025
img
রাজধানীতে নিষিদ্ধ যুবলীগের ৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার Nov 15, 2025
img
মুস্তাফিজের যেসব সতীর্থদের ছেড়ে দিলো দিল্লি Nov 15, 2025
img
আযমী ও আরমানের জন্য জামায়াত ফাইট করেনি, কিন্তু তুলি করেছেন : জাহেদ উর রহমান Nov 15, 2025
img
নতুন পোশাকে বাংলাদেশ পুলিশ Nov 15, 2025
img
ঢাকায় রিকশা চালালেন পাক অভিনেতা আহাদ রেজা Nov 15, 2025
img
লেস্টার সিটির ২ জন হামজার জন্য ঢাকায় Nov 15, 2025
img
চীনে বৃহত্তম একক সোনার মজুতের সন্ধান Nov 15, 2025
img
উপদেষ্টার ভাই নাহিদ ইসলামকে ধমকাইয়া আমাকে বহিষ্কার করাইছে : মুনতাসির মাহমুদ Nov 15, 2025
img
এইচ-১বি ভিসা বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল, বিদেশিদের জন্য দুঃসংবাদ Nov 15, 2025
img
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলো গমের তৃতীয় চালান Nov 15, 2025
img
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ‘রিভিউ আবেদন’ ছাত্রদল নেতাদের Nov 15, 2025
img
১১ ক্রিকেটারকে ছেড়ে দিলো চেন্নাই Nov 15, 2025
img

জামায়াতকে মির্জা ফখরুল

মানুষ সহজে আপনাদের ভোট দেবে না Nov 15, 2025
img
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৫ জনের, হাসপাতালে ভর্তি ৭৯২ Nov 15, 2025