মানুষ পুড়িয়ে মেরে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না : প্রধানমন্ত্রী

অগ্নিসন্ত্রাসীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ পুড়িয়ে মেরে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আমি জানি না, একজন মানুষ কীভাবে আরেকটা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। এমনটি দেখেছিলাম ৭১ সালে, তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বস্তিতে আগুন দিতো। আর মানুষ বেরিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারত। দুঃখের বিষয় এরপর ২০১৩-১৪ সালে এবং এখন ইদানিং সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। পোড়া মানুষগুলোর ক্ষত-বিক্ষত দেহ এবং তাদের আত্মচিৎকার ও পরিবারগুলো কি অবস্থাটায় আছে।

তিনি বলেন, আমি চাই তাদের (অগ্নিসন্ত্রাসী) চেতনা হোক যে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তির দরকার হয়, তাদের পাশে থাকতে হয়। জনগণের অকল্যাণ করে, তাদের পুড়িয়ে মেরে কিছু অর্জন করা যায় না- অন্তত এই বিষয়টা যেন যারা এগুলো করছে তারা বুঝতে পারেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে লাখো বাঙালি স্বাধীনতার জন্য নিজের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সেই স্লোগানটাও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যে ৭ মার্চের ভাষণ এ দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল, সেই ভাষণটাও নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আজকে সেই ভাষণ আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্থান পেয়েছে। আড়াই হাজার বছরে সামরিক-অসামরিক নেতারা যত ভাষণ দিয়েছে, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এটুকু আমরা করতে পেরেছি।

‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলো চিহ্নিত করা, যেখানে গণকবর আছে সেগুলো সংরক্ষণ করা, স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে তোলা এবং প্রত্যেকটি উপজেলায় আমরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরি করেছি। সেখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মিউজিয়াম হবে। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারপ্রধান বলেন, নতুন প্রজন্মকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বীরত্বের ইতিহাস জানা দরকার। স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই আজকে আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে পারি। কিন্তু একসময় সেটা পারিনি। আগে বিদেশে যেতে হলে করাচিতে গিয়ে ভিসা নিতে হতো। আর এখন আমাদের স্বাধীন দেশে, আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী শুধু দেশে নয়, বিদেশ শান্তিরক্ষা মিশনে বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইতোমধ্যে অনেকে জীবন দিয়েছেন, তাদের আমি স্মরণ করি।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আবারও বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম Nov 20, 2025
img
শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর আমাকে মোদি ফোন করেছিলেন: ট্রাম্প Nov 20, 2025
img
দ্বিতীয় টেস্টে নেই গিল, প্রথমবার নেতৃত্ব দেবেন পান্ত Nov 20, 2025
img
জন্মদিনে বৃদ্ধাশ্রমে বুবলী Nov 20, 2025
img
চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনে রেমিট্যান্স ছাড়ালো ২ বিলিয়ন Nov 20, 2025
img
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব গৃহীত Nov 20, 2025
img
বাড়ছে রিটার্ন দাখিলের সময় Nov 20, 2025
img
৩৯ টাকা কেজিতে ধান, ৫০ টাকায় সিদ্ধ চাল কিনবে সরকার: খাদ্য উপদেষ্টা Nov 20, 2025
img
ইউরোপের দেশ চেক প্রজাতন্ত্রে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে আহত প্রায় অর্ধশত Nov 20, 2025
img
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ফেরাতে নতুন পথে হাঁটছে সরকার Nov 20, 2025
img
সারাজীবন মানুষ আমাকে ইউনূসের মেয়ে বলে ডেকে এসেছে : মেঘনা আলম Nov 20, 2025
img
খোলামেলা পোশাকে মেয়ে মুনমুনকে মেনে নিতে পারতেন সুচিত্রা সেন? Nov 20, 2025
img
৩-৪ কার্যদিবসের মধ্যে গণভোট আইন করা হবে : আইন উপদেষ্টা Nov 20, 2025
img
ভোটের মাধ্যমে জামায়াতের মিথ্যাচারের জবাব দেবেন নারীরা : আবুল খায়ের ভূঁইয়া Nov 20, 2025
img
ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল বাংলাদেশ, ফলো অনের শঙ্কায় আয়ারল্যান্ড Nov 20, 2025
img
ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল Nov 20, 2025
img
মানসিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল বিশ্ববিখ্যাত গায়িকা লেডি গাগাকে Nov 20, 2025
img
যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় ‘ফোর স্টার’ গ্রুপের ২ সদস্য রিমান্ডে Nov 20, 2025
img
বক্স অফিসের রাণী এবার রাশমিকা, আয় ১৩শ কোটি Nov 20, 2025
img
নেপালে ফের ‘জেন-জি’ বিক্ষোভ, কারফিউ জারি Nov 20, 2025