'টিকা থেকে পায়ে ক্যান্সার' জিহাদুলকে বাঁচাতে প্রয়োজন ১২ লাখ টাকা

শিশুটির নাম জিহাদুল ইসলাম। বয়স মাত্র তিন বছর সাত মাস। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এইটুকুন বয়সেই তাকে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে।

জিহাদুলের বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার স্বর্ণঘোষ গ্রামে। তার বাবা ইয়াকুব বেপারি। তিনি স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক। আর মা জান্নাতুল আক্তার একজন গৃহিনী।

জিহাদুলের শারীরিক অবস্থা জানতে শিশুটির বাবা ইয়াকুব বেপারির সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ টাইমসের এই প্রতিবেদকের।

ইয়াকুব বেপারি বাংলাদেশ টাইমসকে জানান, জিহাদুল তাদের একমাত্র সন্তান। তার জন্মের পর শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া গ্রামের টিকাদান কেন্দ্রে বিসিজি, পেন্টা (ডিপিটি, হেপ-বি, হিব), পিসিভি, ওপিভি, আইপিভি, এমআর (হাম ও রুবেলা) ও হাম (২য় ডোজ) টিকাগুলো দেন। কিন্তু ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর ওই কেন্দ্রে এক চিকিৎসক তার ছেলের ডান পায়ে হামের শেষ ডোজের টিকা দেন। ওই টিকা দেয়ার পরে জিহাদুলের পা ফুলে যায়। শুরু হয় যন্ত্রণা। ব্যথা তীব্রতর হতে থাকলে এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয় জিহাদুলকে। কিন্তু যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলেনি জিহাদুলের।

পরবর্তীতে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ মোস্তফা খোকন, মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান, ডা. শামীম আব্দুল্লাহ’র শরণাপন্ন হন জিহাদুলের বাবা ইয়াকুব। তাদের পরামর্শে কয়েক মাস চিকিৎসা চলে। এক পর্যায়ে ওই চিকিৎসকরা জিহাদুলকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। তাদের কথামতো ঢাকায় নিয়ে আসা হয় জিহাদুলকে।

এরপর আরো দীর্ঘতর হতে থাকে জিহাদুলের চিকিৎসা। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে দৌড়াতে থাকেন ইয়াকুব। তবুও যদি আদরের ধন সুস্থ হয়।

ইয়াকুব জানান, ঢাকা শিশু হাসপাতালের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে চলে জিহাদুলের চিকিৎসা। এক পর্যায়ে তার পায়ে বায়োপসি করানো হয়। তখন ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন চিকিৎসকরা জানান জিহাদুলের পায়ের অস্ত্রোপচার করলে পুরো শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়তে পারে।  শেষমেশ বাংলাদেশের চিকিৎসকদের পরামর্শে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি জিহাদুলকে ভারতের চেন্নাইয়ে ভেলোর শহরে অবস্থিত সিএমসি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ড. লেনি গ্রেস ম্যাথিউর অধীনে জিহাদুলের চিকিৎসা চলতে থাকে।

ইয়াকুব বেপারি ভারতীয় ওই চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান, চিকিৎসকরা জিহাদুলকে নিয়ে ভারতের হাসপাতালে ১৫ মাস থাকতে বলেন। এই ১৫ মাসে জিহাদুলের চিকিৎসা বাবদ খরচ হবে ১২ লাখ টাকা। এত টাকার ব্যবস্থা করা ইয়াকুবের পক্ষে কোনো ভাবেই সম্ভব নয়, তাই ছেলেকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি।

খরচের কারণে জিহাদুলের এলোপ্যাথি চিকিৎসা বাদ দিয়ে মাদারীপুরের একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন ইয়াকুব। সেই চিকিৎসকের পরামর্শে চলছে জিহাদুলের চিকিৎসা।

ইয়াকুব বেপারি বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ‘জিহাদুলের পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। সব সময় কান্না করে। প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর অন্তর হোমিও ওষুধ খাওয়ানোর পর ব্যথা একটু কমে। ছেলেকে নিয়ে এভাবে জীবন যাচ্ছে আমাদের।’

কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে কুরআনে হাফেজ বানানোর অনেক ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সে এখন বিছানাবন্দি। যত দিন যাচ্ছে জিহাদুলের পা তত ফুলে যাচ্ছে। আমার ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

ছোট্ট জিহাদুলের চিকিৎসার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন ইয়াকুব বেপারি। তার সঙ্গে যোগাযোগ ও আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে নিচের ঠিকানা ও ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

 

যোগাযোগ:

ইয়াকুব বেপারি

গ্রাম: স্বর্ণঘোষ

ডাকঘর: দালুকা

উপজেলা: শরীয়তপুর সদর

জেলা: শরীয়তপুর

মোবাইল ফোন নম্বর : ০১৯১৭-৩৮৭০১০ (বিকাশ)

 

 

 

টাইমস/কেআরএস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
১৭ বিয়ে করা বন কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিলো পুলিশ Sep 18, 2025
img
মাসিক ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সে কমবে ঋণ নির্ভরতা Sep 18, 2025
img

অপেক্ষাকাল কমছে

সরকারি কর্মচারীদের অবসরে বাড়ছে সুবিধা Sep 18, 2025
img
ডিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় লেনদেন ১৫০ কোটি টাকা Sep 18, 2025
img
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইইউ প্রতিনিধি দলের সন্তোষ প্রকাশ Sep 18, 2025
img
সম্মেলনের আগে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ ফজলুর রহমানের Sep 18, 2025
img
‘বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ জারির মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানকে পাকাপোক্ত করতে হবে’ Sep 18, 2025
img
পাইক্রফটকে ‘ভারতের প্রিয় ম্যাচ রেফারি’ বললেন রমিজ রাজা Sep 18, 2025
img
পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি Sep 18, 2025
img
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো নিষিদ্ধ হয়ে যাক : ঐশী Sep 18, 2025
img
প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব : তারেক রহমান Sep 18, 2025
img
দ্বিতীয় দিনের মতো ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন নাহিদ Sep 18, 2025
img
বাংলাদেশে সবচাইতে আগে জরুরি জাতীয় নির্বাচন : জিল্লুর রহমান Sep 18, 2025
img
মেটা উন্মুক্ত করলো নতুন ডিসপ্লে স্মার্ট গ্লাস Sep 18, 2025
img
গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল: বার্নি স্যান্ডার্স Sep 18, 2025
img
ঢাকায় আজ বিক্ষোভ করবে জামায়াতসহ ৭ দল Sep 18, 2025
img
জয়পুরহাটে ছাত্রদলের সম্মেলন ব্যর্থ, ৭ নেতাকে বহিষ্কার Sep 18, 2025
img
তোমার অভাব প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করি: অপু বিশ্বাস Sep 18, 2025
img
আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড Sep 18, 2025
img
সমুদ্রে পাওয়া গেল ৮ ধরনের ভারী খনিজ Sep 18, 2025