আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে মোবাইল সিম এবং ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেছে। ২০২৪ এর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোবাইল ফোনের গ্রাহক তথা সিম বন্ধ হয়েছে ৮৫ লাখ। এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমেছে এক কোটি ১১ লাখ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ফোন বন্ধ করে গা-ঢাকা দেওয়া বা দেশ ছাড়া কারণে এমনটা হতে পারে।
বিটিআরসি জানায়, ২০২৪ এর জুন মাস শেষে দেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১৯ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার। এক মাস পর জুলাই শেষে তা কমে দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার। ডিসেম্বর শেষে এ গ্রাহক দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার। অর্থাৎ ছয় মাসে দেশে ৮৫ লাখ সিম বন্ধ হয়েছে।
মোবাইল ফোন গ্রাহক সবচেয়ে বেশি কমেছে বাংলালিংকের। তাদের গ্রাহক কমেছে প্রায় ৪৫ লাখ ১০ হাজার, রবি আজিয়াটার গ্রাহক কমেছে প্রায় ২৭ লাখ ৮০ হাজার এবং গ্রামীণফোনের গ্রাহক কমেছে ১০ লাখ ১০ হাজার। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যায় কোন পরিবর্তন আসেনি।
এদিকে ২০২৪ এ জুন শেষে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার। জুলাই শেষে তা কমে দাঁড়ায় ১৪ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার। আর ডিসেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ কোটি ১১ লাখে। যদিও এ সময় আইএসপি ও পিএসটিএন তথা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে ১০ লাখ।
২০২৪ এ জুনে দেশে আইএসপি ও পিএসটিএন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল এক কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার। জুলাই ও আগস্টে তা অপরিবর্তিত থাকলেও সেপ্টেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় এক কোটি ৩৭ লাখ ৪০ হাজার। অক্টোবর ও নভেম্বরে তা অপরিবর্তিত ছিল। তবে ডিসেম্বর তা বেড়ে দাঁড়ায় এক কোটি ৪০ লাখ ৪০ হাজারে।
অপারেটরগুলো বলছে, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে অনেকে মোবাইল ফোনের একাধিক সিম বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে গ্রাহকও কমে গেছে। যদিও সংশ্লিষ্টরা জানান, মূল্যস্ফীতি বা ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাবে যতটা না গ্রাহক কমছে তার থেকে বেশি কমেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরুর পর। জুলাইয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর থেকে হঠাৎ করে মোবাইল গ্রাহক কমতে শুরু করে।
টিএ/