গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা নাকি হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ, বুঝবেন কীভাবে?

গ্যাস্ট্রিক ব্যথা ও হার্ট অ্যাটাক দুটি ভিন্ন শারীরিক সমস্যা, কিন্তু অনেকেই এদের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন না। গবেষকদের মতে, গ্যাসের ব্যথা ও হার্ট অ্যাটাকের একটি সাধারণ মিল হলো বুকের ব্যথা। তবে পার্থক্যটি বুঝতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা প্রয়োজন।

গ্যাসের ব্যথা সাধারণত পেটে জমে থাকা গ্যাস অথবা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে হয়ে থাকে। আমাদের পাকস্থলীতে গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি থেকে রস তৈরি হয়। যা খাবার হজমে সাহায্য করে। কিন্তু যখন পাকস্থলীর মিউকাস স্তর দুর্বল হয়ে পড়ে তখন অ্যাসিড রিফ্লাক্স (যখন পেটের বিষয়বস্তু খাদ্যনালীতে প্রবাহিত হয়ে অস্বস্তির কারণ হয়।

এই অবস্থার ফলে প্রায়ই পেটের উপরের অংশে বা বুকের নিচের অংশে জ্বালাপোড়া হয় এবং বুকের মধ্যে ব্যথা সৃষ্টি হয়।) অনেকের GERD (Gastroesophageal Reflux Disease) নামক সমস্যা থাকতে পারে, যার ফলে পেট ও বুকের মাঝে ব্যথা অনুভূত হয়। এটি হার্ট অ্যাটাকের মতো অনুভূত হতে পারে, কিন্তু আসলে তা নয়।হার্ট অ্যাটাক সাধারণত বুকের মাঝখানে বা বাম দিকে অনুভূত হয়।

এই ব্যথা কাঁধ, ঘাড়, চোয়াল, পিঠ বা হাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এটি অত্যন্ত তীব্র ও অসহনীয় হতে পারে। অনেক সময় মনে হয় যেন বুকে ভারী কিছু রাখা হয়েছে। হার্ট অ্যাটাক হলে শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা এবং অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক মূলত করোনারি আর্টারিতে ব্লকেজ হওয়ার কারণে হয়। যার ফলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা সাধারণত বাম দিকে অনুভূত হয় কিন্তু গ্যাসের ব্যথা পেটে বা বুকের নিচের অংশে অনুভূত হয়। গ্যাসের ব্যথায় বুক এবং গলায় জ্বালাপোড়া অনুভূত হয় যা হার্ট অ্যাটাকের ব্যথার তুলনায় অনেক কম তীব্র হয়।

হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে কিন্তু গ্যাসের ব্যথা তুলনামূলকভাবে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের সাথে শ্বাসকষ্ট, বমিভাব এবং অতিরিক্ত ঘাম হতে দেখা যায় তবে গ্যাসের ব্যথায় সাধারণত এইসব উপসর্গ কম হয়।

যদি বুকের ব্যথা অনুভূত হয় এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষত যদি ব্যথার সাথে শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা বা অতিরিক্ত ঘাম দেখা দেয়। তাই অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।


এমআর/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ