চীন বিয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সহজতর করতে ও দম্পতিদের আর্থিক চাপ কমাতে শনিবার কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে, যা জন্মহার বৃদ্ধির জন্য বেইজিংয়ের সর্বশেষ উদ্যোগ।
সামাজিক কলঙ্ক ও কম সুরক্ষার কারণে চীনে বিয়ের বাইরে সন্তান জন্মদান অত্যন্ত বিরল। দম্পতিরা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ও সন্তান ধারণে আগ্রহ হারানোর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেমন নগদ প্রণোদনা ও শিশুর যত্নের পরিকাঠামো নির্মাণের প্রতিশ্রুতি। নতুন পদক্ষেপটি দম্পতিদের তাদের বাসস্থানেই বিয়ের নিবন্ধন করার সুযোগ দেবে।
সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি শনিবার একটি সরকারি নথির উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানায়। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ‘এই সংস্কারটি তাদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য, যারা তাদের নিবন্ধিত জন্মস্থানের বাইরে বসবাস বা কাজ করেন, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম।’
এখন পর্যন্ত দম্পতিদের যে জায়গায় বর বা কনের নাম নাগরিক নিবন্ধনে ছিল, সেখানে গিয়ে নিবন্ধন করতে হতো, যা ভ্রমণ ও আর্থিক বোঝা সৃষ্টি করত। যেমন বেইজিংয়ের উত্তরাঞ্চলে বসবাসরত একটি দম্পতি যদি দেশের অন্য কোনো জায়গা থেকে আসতেন, তবে তারা রাজধানীতে তাদের বিয়ে নিবন্ধন করতে পারতেন না।
সিসিটিভি বলেছে, ‘জনগণের প্রত্যাশার প্রতি আরো ভালোভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য এবং পাইলট প্রকল্পগুলোর সফলতার ভিত্তিতে, দেশের পুরোপুরি বিয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে।’
অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে চীনে গত বছর বিয়ের সংখ্যা এক-পঞ্চমাংশ ও টানা তৃতীয় বছর জনসংখ্যা হ্রাস হয়েছে। সিসিটিভি জানিয়েছে, এই বিষয়টি সমাধান করতে আরো একটি পদক্ষেপ হিসেবে নাগরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় যৌতুক ও বিয়ের অনুষ্ঠানে অপচয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাবে। যৌতুক প্রায়ই শ্বশুরবাড়ির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে এবং একটি তরুণ দম্পতির জীবনযাত্রার জন্য অবদান হিসেবে দেখা হয়। তবে এই খরচ কখনো কখনো অত্যন্ত বেশি হতে পারে এবং বরের পরিবারে আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, পাশাপাশি সামাজিক অসমতা বাড়াতে পারে।
বিভিন্ন কারণে তরুণ চীনারা বিয়ে ও সন্তান ধারণে হতাশাগ্রস্ত, এর মধ্যে একটি বড় কারণ হলো অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য সঞ্চয়ের অভাব, যা সাধারণত বিয়ের আগে করতে হয়। শিক্ষার খরচও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেমন ডে কেয়ারের খরচ বা প্রাইভেট টিউশন, যা একটি শিশুর একাডেমিক সাফল্যের জন্য প্রায় অপরিহার্য হিসেবে দেখা হয়।
সূত্র: এএফপি
আরএইচ