মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. হৃদয় হোসেন (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালজানা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, স্কুলে যাওয়া আসার সময় আসামি হৃদয় রাস্তাঘাটে ভুক্তভোগীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন। এতে কোনো সাড়া না পাওয়ায় গত ১৩ মার্চ রাতে ওই স্কুলছাত্রী প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে টয়লেটে যাওয়ার সময় ওত পেতে থাকা হৃদয় ওই স্কুলছাত্রীর মুখে চেতনানাশক মেডিসিন মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যান।
এক পর্যায়ে ওই স্কুলছাত্রীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে গেলে ১৯ মার্চ তাকে নিয়ে হৃদয় বাড়ি আসেন। পরে হৃদয়ের ভাই ওই স্কুলছাত্রীকে তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেন।
ভিকটিমের বড় ভাই মামলার বাদী বলেন, ‘হৃদয় আমার বোনকে ফেরত দেওয়ার পর প্রথমে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। পরে সেখান থেকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
সেখানে কয়েক দিন ভর্তি থাকার পর বোনের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে জাতীয় মানসিক হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন ‘ বিষয়টি শিবালয় থানা পুলিশে জানানো হলে তারা কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে কোর্টে মামলা করা হয় বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, ‘৫ মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে তার সংসার। ওদের বাবা মারা গেছেন বহু আগে।
অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। ওই মেয়েটা সবার ছোট। আমার ছেলে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে বিবিএ পড়ে। এর পাশাপাশি একটি এনজিওতে চাকরি করে। ওই টাকায় সংসার চলে।
কিন্তু এর মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে গেল। ঢাকা নিয়ে মেয়েকে চিকিৎসা করার মতো কোনো টাকাও নেই।’ তার মেয়ের এই অবস্থার জন্য দায়ী ব্যক্তির সর্ব্বোচ শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগীপক্ষের আইনজীবী খন্দকার সুজন হোসেন বলেন, স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের বিষয়ে ২৩ মার্চ নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে মিস পিটিশন মামলা করা হয়। বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে শিবালয় থানা পুলিশকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ মামলার প্রধান আসামি হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে। এতে করে ভিকটিম ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয় এবং সেই সঙ্গে ভিকটিমের পক্ষে বিনা খরচে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ওই আইনজীবী।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, আদালতের নিদের্শে এ ঘটনায় থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের বিষয়টি শিকার করেছেন। এ ঘটনায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এফপি/টিএ